ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের মেধাবী ছাত্র টুলু হত্যা মামলা

র‌্যাবের অভিযানে ধরা পড়েছে ৪ আসামি
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের মেধাবী ছাত্র হাবিবুর রহমান টুলু হত্যা মামলায় এজাহার নামীয় ৪ আসামিকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হলো তালসার গ্রামের মুল্লুক চাঁদ ম-লের ছেলে জাকির ম-ল, একই গ্রামের জহির ম-লের ছেলে মিল্টন ম-ল, নজরুল ম-লের ছেলে আসাদুল ও ইসমাইল ম-লের ছেলে জাকির। গতকাল শনিবার বিকেলে ঘাগা তালসার বাজারে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পিবিআই’র তদন্তে আদালতে হত্যা মামলা ও আসামিদের নামে ওয়ারেন্ট থাকার পরও আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতো বলে অভিযোগ। ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ এর এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় গতকাল শনিবার র‌্যাবের স্কোয়াড কমান্ডার এএসপি গোলাম মোর্শেদের নেতৃত্বে অভিযান দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘাগা বাজার থেকে হত্যা মামলার এ ৪ আসামিকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হত্যা মামলার আসামি বলে র‌্যাব জানায়। অভিযোগ পাওয়া গেছে তালসার গ্রামের মেধাবী ছাত্র হাবিবুর রহমান টুলুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। এরপর হত্যাকা- ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করা হয়। পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আদালতের নির্দেশে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করে। পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে হত্যার বিষয়টি ওঠে আসায় প্রমাণিত হয় ডাক্তারের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও থানায় দায়ের করা আত্মহত্যা মামলাটি সঠিক ছিলো না।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১০ জুন তালসার গ্রামের সাব্দার আলীর স্কুল পড়–য়া ছেলে হাবিবুর রহমান টুলুকে একই গ্রামের জাকির হোসেন, আসাদুল, নজরুল ইসলাম, আলামিন, মিল্টন, জমির, আমিরুদ্দীন ও জমির পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। হাবিবুর রহমান টুলু হত্যা মামলার আইনজীবী গৌতম কুমার জানান, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনার পর থেকে নানা ভাবে বাদীকে হয়রানি করে আসছে। মোটা অঙ্কের টাকার প্রস্তাব দিয়ে মামলাটি মিমাংসা করতে না পেরে প্রধান আসামি জাকির হোসেন বাদী সাব্দার আলীর নামে ৫-৬টি মিথ্যা মামলা করে। ফলে আসামিদের অত্যাচারে উল্টো বাদীই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলো।
উল্লেখ্য, হাবিবুর রহমান টুলু (১৪) কোটচাঁদপুরের তালসার কাজি লুৎফর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র। একই স্কুলের ছাত্রী ও নজরুল ম-লের মেয়ে শাহানাজ ঘটনার ৩ দিন আগে অন্য একটি ছেলের সাথে পালিয়ে যায়। এ নিয়ে তারা স্কুলছাত্র টুলুকে সন্দেহ করতে থাকে। গত ১০ জুন রাতে প্রধান আসামি জাকির ম-ল ফোন করে টুলুকে তার সাথে দেখা করতে বলে। টুলু সরল মনে তার সাথে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরদিন গ্রামের একটি বাগানে ঝুলন্ত অবস্থায় টুলুর লাশ পাওয়া যায়। মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার আগেই আসামিরা বাড়ির মালামাল নিয়ে গাঢাকা দেয়। বাদী টুলুর পিতা সাবদার ম-ল জানান, টুলু বাইরে যাওয়ার সময় তার কাছে নিজের শিক্ষা বৃত্তির ১৩শ’ ও জমি বিক্রির এক লাখের বেশি টাকা ছিলো। সে টাকাও খুনিরা নিয়ে যায়।