দামুড়হুদা তেলপাম্পের সামনে দু’মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষসহ মিনি ট্রাকের ধাক্কা
কুড়ুলগাছি/দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদায় ট্রাক অতিক্রম করার সময় দু’মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে রিপন (২২) নামের এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে অপর মোটরসাইকেল আরোহী নাজমুল হক (২৬) ও তার সাথে থাকা খালাতো বোন তানজিলা খাতুন (১৬)। গতকাল মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে দামুড়হুদা-দর্শনা সড়কে আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের অদূরে তেলপাম্পের সামনে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রিপন উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের চণ্ডিপুর গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে। দুর্ঘটনায় আহত অপর মোটরসাইকেল আরোহী নাজমুল একই উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের আইজাল হকের ছেলে। রিপনের অকালমৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নিহত রিপন ২৫দিন আগে টেলিটকের ইজিলোডের চাকরি নেয়। গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় অঙ্কে অকৃতকার্য হলে এবার ওই পরীক্ষায় সে অংশ নিয়েছে। তার লাশ গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় নিজ গ্রামে নেয়া হয়। গতরাতেই দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়–লগাছি ইউনিয়নের চ-িপুর গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে রিপন মোটরসাইকেলযোগে গতকাল মঙ্গলবার সকালে কর্মস্থল চুয়াডাঙ্গাস্থ টেলিটক অফিসে যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি থেকে বের হয়। সকাল পৌনে ৯টার দিকে দামুড়হুদা ফিলিং স্টেশনের সামনে একটি মিনি ট্রাককে ওভারটেক করতে গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির একটি মোটরসাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় রিপন পাকারোডে আছড়ে পড়ে রক্তাক্ত জখম হয়। তার মুখোম-লসহ সারাদেহ রক্তে লাল হয়ে যায়। পথচারিরা তাকে মূমুর্ষূ অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর মোটরসাইকেল চালক নাজমুল ও তার খালাতো বোন তানজিলাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। নাজমুল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও খালাতো বোন তানজিলা চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। নিহত রিপনের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ সন্ধ্যায় নিজবাড়িতে নেয়া হলে স্বজনদের কাঁন্না আর আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। রাত ৮টার দিকে নিহতের জানাজার নামাজ শেষে নিজ গ্রামের কবরস্থানে বেদনাবিধূর পরিবেশে দাফন সম্পন্ন করা হয়। ২ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে নিহত রিপন ছিলো সবার বড়। প্রতিবেশীরা জানান, নিহত রিপন গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং গণিত পরীক্ষায় ফেল করে। সে চলতি বছর অর্থাৎ গত শনিবার শুধুমাত্র ওই গণিত পরীক্ষা দেয়। রিপন পড়ালেখার খরচ যোগাতে মাস খানেক আগে মোবাইল কোম্পানি টেলিটকে চাকরি নেয়। অন্যান্য দিনের ন্যায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে নিজবাড়ি থেকে মোটরসাইকেলযোগে কর্মস্থালে রওনা হয় রিপন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, অকালমৃত্যু মুছে দিয়েছে তার সব স্বপ্ন। পরে ঘটনাস্থল থেকে দামুড়হুদা থানা পুলিশ দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেল দুটি উদ্ধার করে থানায় নেয়। তবে মিনি ট্রাকের চালক ট্রাক নিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে।