ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বৃদ্ধি পেয়েছে ডায়রিয়ার আক্রান্ত রোগী : হাসপাতালে আসন না থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম চিকিৎসক

কালীগঞ্জ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বৃদ্ধি পেয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত এক সপ্তাহ ধরে এমনটি দেখা দিয়েছে। আক্রান্তরা হাসপাতাল ও প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। আবার হাসপাতালে যথেষ্ঠ পরিমাণে আসন না থাকায় কেউ কেউ নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। চিকিৎসকরা বলেছেন, ভাইরাস ও আবহাওয়াজনিত কারণে এমনটি হচ্ছে। তবে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীরা ঠিকমত চিকিৎসাসেবা নিয়েই বাড়ি ফিরছেন। এদিকে হঠাৎ ডায়রিয়াসহ নানা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসক আছেন টিএইচএ বাদে মাত্র ২জন। ফলে চিকিৎসক সঙ্কটের কারণে চিকিৎসাসেবা খানিকটা ব্যাহত হচ্ছে। চিকিসকদের ভাষ্য রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে তাদেরকে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ৫০ শয্যাবিশিষ্ঠ হাসপাতাল হলেও রোগী ভর্তি আছেন ৭২ জন। অতিরিক্তরা শয্যা ছাড়াও দ্বি-তলা ভবনের বারান্দা ও ফ্লোরে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। বেশির ভাগই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুসহ সব বয়সী মানুষ। এতোগুলো রোগী সামলাচ্ছেন মাত্র ২জন চিকিৎসক। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে হাসপাতালটিতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে প্রায় শতাধিক। তাছাড়াও অনেকে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও বাড়িতে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। শুধু শিশুরাই নয় সব বয়সী মানুষই আক্রান্ত হচ্ছেন। চিকিৎসকদের ভাষ্য এটা ভাইরাসজনিত কারণে হচ্ছে। ফলে আক্রান্তদের সুস্থ হতে একটু সময় লাগছে। এখানে ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য খাবার স্যালাইনের ঘাটতি না থাকলেও শিরায় প্রয়োগের কলেরা স্যালাইনের সরবরাহ অপেক্ষাকৃত কম রয়েছে। হাসপাতালটিতে মেডিসিন, গাইনী, শিশু, অর্থো, ইএনটি, চর্ম, চক্ষু, সার্জারীসহ ১০জন বিশেষজ্ঞসহ মোট ২১জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছে টিএইচএ বাদে সহকারী সার্জন হিসেবে ডা. অরুণ কুমার। কিন্তু তিনি ২ মাসের জন্য বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে বাইরে আছেন। আর ডা. সম্পা মোদক অসুস্থতার জন্য রয়েছেন ছুটিতে। বর্তমানে মেডিসিনে ডা. মাহাফুজুল আলম সোহাগ ও গাইনী বিশেষজ্ঞ হিসেবে ডা. আলাউদ্দীন। মাত্র এ ২জন নিয়মিত চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ডা. মাহাফুজুল আলম সোহাগ জানান, সেবামূলক চাকরির ফলে যত কষ্টই হোক না কেন এটা মেনে নিয়েই সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তবে এভাবে রাতদিন দায়িত্ব পালন করতে হলে এক সময়ে তাদের নিজেদেরও রোগী হয়ে যেতে হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা হোসাইন সাফায়েত জানান, সম্প্রতি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে ডায়রিয়ার প্রকোপটা কিছুটা কমতে শুরু করেছে। চিকিৎসক সঙ্কটের বিষয়ে তিনি জানান, ওপর মহলে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। আশা করছেন খুব তাড়াতাড়ি সঙ্কট কেটে যাবে। তাছাড়াও ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে পোষ্টিংকৃত ২জন চিকিৎসক ডা. শারমিন সুলতানা লুবনা ও সুলতান আহম্মেদকে উভয় স্থানে কাজে লাগাচ্ছেন। তারপরও বর্তমানে রোগীর চাপে তাদের পক্ষে হাসপাতাল সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।