চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন কাঁচা পাকা রাস্তায় দর্শনা চিনিকলের আখ বহনকারী ২০ চাকার রেলগাড়ি

?

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে পথচারীরা : ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা

নজরুল ইসলাম: দর্শনা কেরুজ চিনিকলের কাঁচা মাল আখ। আর এসব আখ সংগ্রহ করা হয় চিনিকলের নিজস্ব ক্রয় কেন্দ্র এবং চাষিদের জমি থেকে। মাড়াই মরসুম শুরু হলে প্রায় দেখা যায় চিনিকলের ট্রাকট্টর আখ আনতে একটি ইঞ্জিনের পেছনে ৪টি ট্রলি জুড়ে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন পাকা ও কাঁচা রাস্তা দিয়ে আখ ক্রয় কেন্দ্রে যায়। ১০-১২ ফিট রাস্তায় ৪টি ট্রলি এবং একটি ইঞ্জিন যাওয়া দেখে আপাতত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে চলছে ২০ চাকার রেলগাড়ি। ফলে সামনে এবং পেছন থেকে আসা পথচারীদের চরম ঝুঁকির মধ্যদিয়ে ওই সমস্ত ট্রাকট্টর অতিক্রম করতে হয়। জনমনে প্রশ্ন সামান্য তেল বাঁচানোর জন্য সরু রাস্তায় ২০ চাকার গাড়ি চালানো কতটা নিরাপদ? এর প্রতিকার কোথায়? না কি কর্তৃপক্ষ ঝুঁকি নিয়েই চালাচ্ছেন এসব গাড়ি? জেলার একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান দর্শনা কেরুজ চিনিকল। আর এ চিনিকলের একমাত্র কাঁচামাল কাঁচা আখ। চিনিকলে আখ সরবরাহ হয়ে থাকে চাষিদের জমি এবং চিনিকলের নিজস্ব ক্রয় কেন্দ্র থেকে। দুঃখজনক হলেও সত্য চিনিকল কর্তৃপক্ষ সামান্য তেল বাঁচাতে বিভিন্ন ঝুঁকি জেনেও আখ ক্রয় কেন্দ্রগুলোতে একটি ট্রাকট্টরের পেছনে ৪টি ট্রলি জুড়ে দেন। ফলে ট্রাকট্টরের ৪ চাকা এবং ৪টি ট্রলির ১৬ চাকা মোট ২০ চাকার গাড়ি জেলার ১০-১২ ফিট রাস্তায় চলাচল করে। সরু এবং আঁকাবাঁকা রাস্তায় ২০ চাকার গাড়ি চলাচলের ফলে ওই গাড়ির সামনে এবং পেছন দিক থেকে চলাচল করা পথচারীরা জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে গাড়িটি অতিক্রম করে থাকে। ঝুঁকিতে পাড়া আমিরুল, তোফাজ্জেল, আনিচ, রহিম, সাবু, তুহিনসহ অনেকেই জানালেন, লম্বা ওই গাড়ি অতিক্রম করতে গিয়ে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি। তাই প্রতি মরসুমে কেরুজ চিনিকলের পরিবহনে ঘটে দুর্ঘটনা। আর দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ গুনতে হয় কর্তৃপক্ষকে। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ গাড়ি সরু রাস্তায় চালানো কতটা যৌক্তিক? চিনিকল কর্তৃপক্ষের যুক্তি ক্রয় কেন্দ্র বা বাণিজ্যিক খামারের আখ চিনিকলে আনার জন্য একটি ইঞ্জিনের সাথে ৪টি খালি ট্রলি যায়। আখ বোঝাইয়ের পর ২টি ট্রলি আনা হয়। আর ২টি ট্রলি খালি থাকে। পরে তা বোঝাই হলে পুনরায় তাতে ইঞ্জিন জুড়ে চিনিকলে আনা হয়। আপাতত দৃষ্টিতে দেখে মনে হয় রাস্তায় চলছে রেলগাড়ি। সামান্য তেল সাশ্রয় করতেই চিনিকল কর্তৃপক্ষ ২০ চাকার গাড়ি সরু রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে চালিয়ে থাকে। এদিকে আখ মাড়াই মরসুম শুরু হলে চিনিকলের ট্রাকট্টরে কোথাও না কোথায় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। আর দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে কর্তৃপক্ষ। প্রশ্ন উঠেছে ক্ষতিপূরণের অর্থ আর যে যুক্তিতে তেল সাশ্রয় করা হচ্ছে কোন টার পরিমাণ বেশি। তাই সরু এবং আঁকাবাঁকা কাঁচা পাকা রাস্তায় ২০ চাকার গাড়ি চালানো কতটা যৌক্তিক? বিষয়টি কি কেরুজ কর্তৃপক্ষ একটু ভেবে দেখবেন? না কি ঝুঁকি নিয়ে চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষতিপূরণ দেয়ার বাড়তি তহবিল জোগাড় করে রেখেছেন?