চুয়ডাঙ্গা মেহেরপুরসহ সারাদেশে ৩য় দিনের কর্মবিরতি পালন করেছে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

স্টাফ রিপোর্টার: সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা ও পেনশন প্রাপ্তির দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিনদিনের কর্মবিরতি মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরসহ সারাদেশে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা কর্মবিরতি পালন করে আসছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েশনের নেতা চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মনি, প্যানেল মেয়র-১ একরামুল হক মুক্তা ও প্যানেল মেয়র-২ মুন্সি রেজাউল করিম খোকন আন্দোলনরত অবস্থানকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন এবং বক্তব্য দেন। বক্তব্যে বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্ম বিরতির কারণে আমরা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে পৌর পরিষদ শিশুদের স্বাস্থ্যসেবাসহ সামগ্রিকভাবে জনসেবা প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছি। ফলে সরকারের উন্নয়ন যাত্রা ম্লান হচ্ছে। দেশের পৌরসভা মূলতঃ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান যা জনস্বার্থে অতীব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। পৌরবাসীর দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় পৌরসভার সকল সেবা সচল রাখার স্বার্থে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ পেনশনসহ বেতন-ভাতা রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট অনুরোধ করছি। এছাড়া পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ। কর্মবিরতি অবস্থান সভার সভাপতিত্ব করেন জেলা কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী মো. আয়ুব আলী বিশ্বাস।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, দর্শনা ও জীবননগর পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিনদিনব্যাপি কর্মবিরতির কর্মসূচি যৌথভাবে পালিত হয়েছে দর্শনা পৌরসভায়। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা ও পেনশনের দাবিতে কর্মবিরতি করছে চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা, দর্শনা ও জীবননগর পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে বেতন-ভাতা ও পেনশনসহ অন্যান্য সুবিধা প্রদানের দাবিতে বাংলাদেশ পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বানে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারিদের কর্মবিরতি কর্মসূচি দর্শনায় পালিত হয়েছে। কর্মবিরতি চলাকালে পৌরসভার সমস্ত নাগরিক সেবাদান থেকে বিরত রেখেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দর্শনা পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারিদের দীর্ঘ ১৩ মাস বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে। চুয়াডাঙ্গার ৪টি পৌরসভার কর্মচারী-কর্মকর্তাদেরই নয়, এ চিত্র সারাদেশের ৩২৮ পৌরসভার মধ্যে বেশীর ভাগই। কর্মবিরতি চলাকালে দর্শনা ও জীবননগর পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দর্শনা পৌর প্যানেল মেয়র রবিউল হক সুমন, কাউন্সিলর মনির সরদার, কেন্দ্রীয় কমিটির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সাজেদা আক্তার, চুয়াডাঙ্গা জেলা পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ, দর্শনা পৌরসভা কর্মকর্তা-কর্মচারি অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক আলম পলাশ, পৌর কর্মকর্তা রুহুল আমীন, আ. মজিদ, আ. রাজ্জাক, মোমিনুল ইসলাম, সরোয়ার হোসেন, জীবননগর পৌর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সারাফাত হোসেন, ওসমান গণি, তরিকুল ইসলাম, আলম হোসেন, হাবিবুর রহমান, হামিদুজ্জামান, হানিফ আলী, বিলকিস খাতুন, ফাতেমা খাতুন, শামসুন্নাহার, ফরিদা পারভিন, আ. রাজ্জাক, ফারুক হোসেন, সমিদ, হাসান প্রমুখ।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতার দাবিতে মেহেরপুরে ৩য় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে মেহেরপুর পৌরসভার সামনে অবস্থান নেয় তার। পরে পৌর চত্বরে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখার সভাপতি তৌফিকুল আলম। বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন দিপু, গাংনী পৌরসভা শাখার সভাপতি আজিজুল হক, সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক। এদিকে, কর্মবিরতি পালন করায় চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষ। পৌরসভা থেকে যে ৩৭টি সেবা প্রদান করা হয় পানি সরবরাহ বাদে সব সেবাই বন্ধ রেখেছে তারা।

Leave a comment