চাকরি ফিরে পেতে পথে পথে ঘুরছেন গাংনী পৌরসভার উচ্চমান সহকারী টিক্কা

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার উচ্চমান সহকারী জামিরুল ইসলাম টিক্কা চাকরি ফিরে পেতে এখন পথে পথে ঘুরছেন। উচ্চাদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তার যোগদান করাচ্ছে না পৌর কর্তৃপক্ষ। ফলে দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে টিক্কার পরিবার।
জানা গেছে, গাংনী পৌরসভার সাবেক মেয়র আহম্মেদ আলী ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভোটে পরাজিত হলে জামিরুল ইসলাম টিক্কাসহ পৌরসভার প্রায় সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ওপর নতুন মেয়রের বাঁকা দৃষ্টি পড়ে। আহম্মেদ আলীপন্থি হিসেবে টিক্কাসহ বেশ কয়েকজনকে পৌরসভা থেকে বিতাড়িত করার ঘোষণা দেন বর্তমান মেয়র আশরাফুলপন্থি লোকজন। ফলে এক সঙ্কট দেখা দেয়। তবে নির্বাচনের আগে থেকেই অবশ্য জামিরুল ইসলাম টিক্কার দুই বছরের ছুটি মঞ্জুর ছিলো। দুর্ঘটনায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত বাঁ পা অপারেশনের জন্য তিনি ছুটি নিয়েছিলেন। ভারতে গিয়ে টিক্কা অপারেশন করিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও নিচ্ছেন। ২০১৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মেয়র হিসেবে আশরাফুল ইসলাম দায়িত্বভার বুঝে নিয়ে মাসিকসভা করেন। ওই সভায় জামিরুল ইসলাম টিক্কাকে বরখাস্ত করেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতার ওপরে বরখাস্তের খবরে যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তার। বিভিন্নভাবে দেনদরবার করেও কোনো সুরাহা না হওয়ায় তিনি উচ্চাদালতের শরণাপন্ন হন।
জামিরুল ইসলাম টিক্কা বলেন, ২০১৬ সালে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করি। ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি বিচারপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ও মি. আমির হোসেন দ্রুত চাকরিতে পুনর্বহাল ও ৬০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ চলতি মাসের ২৬ তারিখের মধ্যে বকেয়া বেতন-ভাতাসহ সমুদয় পাওয়া মিটিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। ওই বছরের ২৬ নভেম্বর গাংনী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ উচ্চাদালতের আদেশের কপি রিসিভ করেন। এরপর থেকেই আমি মেয়রসহ সংশ্লিষ্ঠদের কাছে বারবার ধরনা দিলেও আমাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হচ্ছে না। হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে পৌরকর্তৃপক্ষ আমাকে ঝুঁলিয়ে রেখেছে।
জানা গেছে, একটি অস্ত্র মামলায় সম্প্রতি মেহেরপুর আদালত ১০ বছরের কারাদ- দিয়েছেন পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামকে। বর্তমানে তিনি জেলা কারাগারে হাজতবাস করছেন। প্যানেল মেয়র-১ দায়িত্ব পালন করলেও ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে এখনও কেউ দায়িত্ব পাননি। এ অবস্থায় টিক্কার বিষয়টি কি হবে তা দেখার বিষয়।
বিষয়টি জানতে চাইলে গাংনী পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রকৌশলী শামীম রেজা বলেন, মেয়র সাহেব জেলে রয়েছেন। বিষয়টি কি করবেন তা মেয়র সাহেব জানেন। টিক্কার চাকরিতে পুনর্বহালের ক্ষমতা আমার নেই।