কেন আমরা সকলের সামনে মেধাবী হওয়ার দরজা খুলি না?

পাঠদানে আন্তরিকতার পাশাপাশি পাঠগ্রহণে মনোনিবেশের পরিবেশ গড়ে তুলতে পারলে শিক্ষার মান বাড়তে বাধ্য। এই পাঠদান আর পাঠগ্রহণের পরিবেশ গড়ে তুলতেই মূলত মরিয়া চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ। শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে মতবিনিময়সভায় গৃহীত ৩৯টির মতো সিদ্ধান্তের প্রায় প্রতিটিরই পরতে রয়েছে ওই পঠন-পাঠনে আন্তরিক করার বা আন্তরিক হতে বাধ্য করার প্রয়াস। শিক্ষাদানকে বাণিজ্যিক দৃষ্টিতে না দেখার মানসিকতা গড়ে তোলার চেষ্টাও লুকিয়ে এই প্রচেষ্টার অন্তরে।
শিক্ষার মান নির্ণয়ের মাপকাঠি কি শুধুই পাবলিক পরীক্ষা? অবশ্যই না। পরীক্ষায় খুব একটা ভালো না করলেও মানসম্পন্ন শিক্ষা ওই শিক্ষার্থীকে যতোটা সময়োপযোগী করে তোলে, পরীক্ষায় অভাবনীয় ভালো করলেও সর্বক্ষেত্রে সবার জন্য তা হয় না। সময়ের স্রোতে পিছিয়ে পড়লে পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়ার যেমন সুযোগ হাতছাড়া হয়, তেমনই প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে কঠোর অধ্যবসায়ের বিকল্প নেই। এই অধ্যবসায়ে যে শিক্ষার্থী যতোটা সৃজনশীল বর্তমান শিক্ষার মাপকাঠিতে সে অতোটাই অগ্রগামী। সে কারণেই মুখস্ত করার সেকেলে সেই রেওয়াজ বদলে এখন পাঠ্যপুস্তক ভালো করে পড়লেই সৃজনশীল হওয়া যায়। একজন সৃজনশীল মানুষ নিজের এবং জাতির ভাগ্য বদলানোর সংগ্রামে সফল হয়। এই সফলতার পথে ভালো ফলাফলের আশায় শিক্ষার্থীর ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া পড়ার চাপই বড় অন্তরায়।
একজন শিক্ষার্থী খেলার সুযোগ পেলে তীব্র খরায় দীর্ঘসময় ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেও হাসে স্বস্তি বা তৃপ্তির হাসি। অথচ তাকেই যখন বৈদ্যুতিন পাখার নিচে মনোরম পরিবেশে বসে পড়তে বলা হয়? অনেকের ক্ষেত্রে অবয়বে বিরক্তির রেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যাদের ক্ষেত্রে লেখাপড়াটাকেও তথা জ্ঞান অর্জন বা জানার মজাটাকে বিনোদনের মতো করে তোলা সম্ভব হয় তারাই মেধাবী বলে পরিচিতি পায়। তা হলে সকল শিক্ষার্থীর সামনে কেন আমরা মেধাবী হওয়ার দরজা খুলি না? বিষয়টি বেশি বেশি করে ভেবে দেখে শিক্ষককে সত্যিকারের শিক্ষক হওয়া দরকার। পরিবেশ গড়তে হবে শিক্ষানুরাগী সকলকে।