আলমডাঙ্গার জুগিরহুদায় বোনের বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলে ভাইদের নির্যাতন : থানায় মামলা

স্টাফ রির্পোটার: আলমডাঙ্গার পল্লি জুগিরহুদায় পৈত্রিক ভিটেয় আশ্রয় নেয়া বোন তার ভাইদের বিরুদ্ধে করেছেন নির্যাতন মামলা। এবার ভাই ভাবিসহ গ্রামের অনেকেই বোন ও ভাগ্নির বিরুদ্ধে তুললো গ্রামেরই হেলালের সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ। পাল্টাপাল্টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রামে উত্তেজনা দানা বেঁধেছে। প্রকৃত ঘটনা উন্মোচনে পুলিশ ও সাংবাদিকদের আশুদৃষ্টি দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। গতকাল সোমবার বিকেলে জুগিরহুদা গ্রামে স্থানীয়দের অনেকে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ অনুরোধ জানিয়ে সঠিক সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানান।
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের জুগিরহুদা গ্রামবাসী জানিয়েছে, আনুমানিক ২২ বছর আগে জুগিরহুদা গ্রামের চাম্পা খাতুনের সাথে বড় গাংনীর জহুরুলের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এদের সংসারে ২ কন্যাসন্তান আসে। ৪ বছর আগে জহুরুল তার স্ত্রী চম্পা খাতুনকে নিয়ে শশুরবাড়ি জুগিরহুদা চলে আসে। ৬ মাস থাকার পরে দুজনের মধ্যে বনিবনা না হলে বিচ্ছেদ ঘটে। চম্পা খাতুন পরের বাড়িতে কাজ করে ২ কন্যাসন্তানকে নিয়ে অতি কষ্টে সংসার চালাতে থাকেন। চম্পার চাচাতো চাচা একদিল বিশ্বাসের ছেলে হেলাল এদের পাশে দাঁড়ায়। মেলামেশা নিয়ে গ্রামে নানা গুঞ্জন ওঠে। এরই এক পর্যায়ে চম্পার এক মেয়েকে বিয়ে দেয়ার জন্য চম্পার ভাই ভাবিরা চাপ দিতে শুরু করে বলে অভিযোগ তোলে চম্পা। নির্যাতনেরও অভিযোগ তোলা হয়। মামলাও হয়েছে। পক্ষান্তরে গতকাল বিকেলে গ্রামে স্থানীয় সাংবাদিকদের আহ্বান জানানো হয়। উপস্থিত সাধারণ মানুষের সামনে চম্পার ভাই, শাহিন, রিপন ও রুবেল অভিযোগ করে বলেন, বোন ও ভাগ্নির অসহায়ের সুযোগে হেলাল তাদের হাত করে আমাদের নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেছে। ৬ দিন মিথ্যা মামলাতে জেল খেটেছি। কিছু বলতে গেলেই লাঠি দিয়ে মারতে আসে। থানায় মামলা করে। চম্পার মা নিলিমা খাতুন বলেন, আমি আমার মেয়েকে হেলালের কোলে বসে থাকতে দেখেছি, নাতনি সোনিয়ার সাথে হাতেনাতে অনৈতিক কাজে ধরেছি। গভীররাতে তাদের ঘর থেকে হেলালকে বেরিয়ে যেতে দেখেছি অনেকদিন। কিছু বলেতে গেলে হুমকি দেয়। আমার মেয়ের সাথে অবৈধ কাজও করবে আবার হুমকিও দেবে। কিছু বলার জো নেই। এ বিষয়ে চম্পা ও তার মেয়ে সোনিয়ার কাছে জানতে চাইলে তারা তাদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর করা অভিযোগ সম্পূর্ণ বাজে ও বানোয়াট বলে চম্পা বলেন, স্বামীর কাছে থেকে বিচ্ছেদের পর থেকে পিতার বাড়ির এক কোনায় টিনের ছুপড়ি ঘর বেঁধে ২ মেয়েকে নিয়ে থাকি। আমার পিতা-মাতা ভাইয়েরা আমাদের কোনো খোঁজ খবর নেয় না। আমি পরের পানবরজে ও বাড়ি বাড়ি কাজ করে অতি কষ্টে সংসার চালাই। কিছুদিন আগে আমার নাবালক মেয়ে স্থানীয় স্কুলের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী সোনিয়াকে বিয়ে দিতে যায় তার মামা-মামি। নাবালক মেয়ের বিয়ে দিতে রাজি না হলে আমাকে মারধর করে। এ সময় বাড়ি থেকে পালিয়ে চাচাতো চাচা হেলালের বাড়িতে উঠি। তার বাড়িতে কয়েকদিন থেকে বাড়ি ফিরে আসলে আবারও মারধর করে। ওইদিন আলমডাঙ্গা থানায় নারী নির্যাতন মামলা করি ভাইদের বিরুদ্ধে। চম্পার মেয়ে সোনিয়া বলেন, আমার মামিরা আমাকে খারাপ পথে নিয়ে যাবার জন্য সবসময় চেষ্টা করে। পরপুরুষের কাছে থেকে টাকা নিয়ে আমাকে মামির বাড়ি বসে গল্প করতে বলে।
একদিল বিশ্বাসের ছেলে হেলালের (৫০) সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক নয়। চক্রান্তমূলক।