ইবি প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছ থেকে মাদকসেবীদের ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ^বিদ্যালয়ের মফিজ লেক এলাকায় মাদকসেবন করে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করায় তাদের পুলিশে সোপর্দ করে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান। পরে ছাত্রলীগ তাদেরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নেয় বলে জানা গেছে। গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মফিজ লেক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল রোববার বিকেলে বিশ^বিদ্যালয়ের মফিজ লেক এলাকায় মাদকসেবন করছিলো বহিরাগত মাদকসেবী মোহাইমিনুল ইসলাম লামন। তার সাথে ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ইমতিয়াজ এবং ইংরেজী বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ইউসুফ। এসময় শেখ হাসিনা হলের তিন ছাত্রী লেকে ঘুরতে গেলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করে ওই মাদকসেবীরা। এসময় তারা ছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে অশ্লীল কথা ও গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ওই তিন ছাত্রী জানায়, আমরা লেকে বসেছিলাম। ওরা মফিজ লেকে ঘুরে ঘুরে সবাইকে খারাপ কথা বলছিলো। একপর্যায়ে আমাদের সামনে এসে অশ্লীল কথা বলে এবং খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে আমরা প্রক্টরকে ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি এসে তাদেরকে আটক করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ সোপর্দ শিক্ষার্থীদের গাড়িতে তুলে থানার দিকে রওনা দিলে পথিমধ্যে গাড়ি থামিয়ে ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত কর্মী ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ২০-২৫জন সহযোগী নিয়ে ওই দুই শিক্ষার্থীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নেয়। এসময় পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে ছাত্রলীগ কর্মীদের বাগবিত-া হয় বলে প্রতক্ষদর্শীরা জানায়। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিমের অনুসারী এবং মন্দির ভাঙচুরের দায়ে কেন্দ্র থেকে ২ বছর ধরে বহিষ্কৃত। এসময় বহিরাগত লামনকেও গাড়ি থেকে নেমে যেতে দেখা যায়। পরে তাকে জোর করে মটরসাইকেলে তুলে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এ বিষয়ে ইবি থানার উপপরিদর্শক কমলেশ দাস বলেন, ‘আমরা আটককৃতদের গাড়িতে নিয়ে আসছিলাম। রাস্তা থেকে ছাত্রলীগের আরাফাতসহ ৪০-৫০জন দুই শিক্ষার্থীকে নামিয়ে নেয়। এসময় প্রক্টরও উপস্থিত ছিলো।’ ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, তারা মাদকসেবন করেছিলো কি না তা আমার জানা ছিলো না। জানলে ওই ছাত্রদের জন্য আমি সুপারিশ করতাম না।’ এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই। দায়িত্বরত পুলিশের কাজে আমার ছাত্রলীগের কোনো কর্মী বাধা ঘটালে আমরা দলের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।’
প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কয়েকজন ছাত্রী আমাকে ফোন দিয়ে মাদকসেবনের বিষয়টি জানালে আমি ছুটে গিয়ে মাদকসেবীদের আটক করি এবং ইবি থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করি। পরবর্তী ঘটনার বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’