আগুন ব্যবহারে সর্বাত্মক সতর্কতার বিকল্প নেই

দেশে প্রায় প্রতিদিনই অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটছে। আগুনে পুড়ে বিদ্যুত স্পৃষ্টে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও কম নয়। বিশেষ করে শীতের সময় আগুনের পাশে বসে উষ্ণতা নিতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটছে বেশি। অথচ জেলা পর্যায়ে অগ্নিদগ্ধ রোগীর চিকিৎসার সুব্যবস্থা নেই। সারা দেশের একমাত্র ভরসাস্থল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট। এখানে যেমন উপচেপড়া রোগীর চাপ, তেমনই গ্রামবাংলার সকল দগ্ধ রোগীও ঢাকার বার্ন ইউনিটে নেয়া সম্ভব হয় না। তাছাড়া অগ্নিদগ্ধ রোগীর চিকিৎসা ব্যয়বহুল। দগ্ধের যন্ত্রণাও অসহনীয়। তীব্র।
শুরু হচ্ছে শুষ্ক মরসুম। আগুন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সামান্য অসতর্কতায় বড়ধরনের খেসারত দিতে হতে পারে। ঝরতে পারে তরতাজা প্রাণ। ফলে সতর্কতার বিকল্প নেই। একটি পরিসংখ্যানে জানা যায়, আমাদের দেশে প্রতি বছর অগ্নিদগ্ধ হন প্রায় ৬ লক্ষাধিক মানুষ। সারা বছরে মোট অগ্নিদগ্ধের মধ্যে অর্ধেকের বেশি রান্না করতে গিয়ে পরনের শাড়ি কাপড়ে আগুন লেগে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। বৈদ্যুতিক কারণে অগ্নিদগ্ধের ঘটনাও কম নয়। এছাড়া শিশুদের ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশেরই দগ্ধের কারণ গরম পানি। শীত নিবারণে আগুন পোয়াতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধের শিকার হন অনেকে। গ্রামাঞ্চলে এখনই কুপি বাতির ব্যবহার দেখা যায়। মশা তাড়ানোর কয়েলও অধিকাংশ অগ্নিকা-ের সূত্রপাত। বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে অগ্নিকা-ের ঘটনা তো ঘটছে। বিড়ি সিগারেটের শেষাংশ না নিভিয়ে যেখানে সেখানে ফেলাও অগ্নিকা-ের অন্যতম প্রধান কারণ।
আগ্নিকা- থেকে রক্ষা পেতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। আগুন থেকে রক্ষা পেতে হাতের কাছে যেমন অগ্নিনির্বাপণের প্রাথমিক প্রস্তুতি থাকা উচিত তেমনই অগ্নিদগ্ধ হলে তাকে দ্রুত চিকিৎসকের নিকট নেয়ার বদলে ক্ষত স্থানে টুথপেস্ট, ডিম, বাটা মসলা, দুধের সর জাতীয় কোনো ধরনের অযাচিত কিছু না দেয়াই উত্তম। পুড়ে গেলে শরীরের ভিতরের পানি বের হয়ে যায়, যা খালি চোখে দেখা যায় না। ফলে যতো দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করা যায় ততোই ভালো। তাছাড়া অগ্নিকা-, অগ্নিদগ্ধের ঘটনা হ্রাসে দরকার সচেতনতা। প্রয়োজনে বদলাতে হবে মানুষের নিত্যকার অভ্যাসও।