সন্তানকে মাদকমুক্ত না রাখতে পারলে অর্জিত যাবতীয় সম্পদই বৃথা হয়ে যাবে

আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে অতিরিক্ত আইজিপি শফিকুল ইসলাম

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: শুধুমাত্র মাদকব্যবসায়ীদের পুলিশ গ্রেফতার করলেই আলমডাঙ্গা মাদকমুক্ত হবে না, মাদকসেবীরাই নতুন নতুন মাদকব্যবসায়ী সৃষ্টি করে, প্রয়োজনে তারাই মাদকব্যবসা শুরু করবে। সে কারণে আলমডাঙ্গাকে মাদকমুক্ত রাখতে পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় মাদকবিরোধী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাদকবিরোধী ক্যাম্পেইন, সচেতনতামূলক মতবিনিময়সভা করতে হবে। এজন্য সমাজের সচেতন ব্যক্তিদের এগিয়ে আসতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (এন্টি টেররিজম ইউনিট) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বিপিএম। এসময় তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মকে মাদকমুক্ত রাখতে সকলকে সচেষ্ট থাকতে হবে। সন্তানকে মাদকমুক্ত না রাখতে পারলে অর্জিত যাবতীয় সম্পদই বৃথা হয়ে যাবে।
আলমডাঙ্গাকে মাদকমুক্ত করতে বিশেষ সফলতার জন্য তিনি চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান ও অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ খানসহ আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের প্রশংসা করেন। পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান বলেন, তিনি ইতোপূর্বে ৩ বছর ইমিগ্রেশনে দায়িত্ব পালন করেছেন। ইমিগ্রেশনে চাকরি করে অনেকে বছরে ঢাকায় ৫টি বাড়ি করে। তাকে অনেক যাচাই-বাচাই করে চুয়াডাঙ্গায় পুলিশ সুপারের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছে। তার সম্পর্কে শুধু এটুকু বলে রাখি টাকা দিয়ে তাকে কেনা যাবে না।
আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহ আলম মন্টুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) আহসান হাবীব, আলমডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ খান, আলমডাঙ্গা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজি অরুণ, বিআরডিবি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মহিদ, বিশিষ্ট ঠিকাদার মাহমুদুল কাউনাইন, সাবেক পুলিশ পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন। আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাব সম্পাদক হামিদুল ইসলাম আজমের উপস্থাপনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি সাংবাদিক রহমান মুকুল, যুগ্ম সম্পাদক প্রশান্ত বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রোকন, শাহাবুল ইসলাম, শামীম রেজা, মাহবুবুল ইসলাম উজ্জ্বল, রুনু খন্দকার, জুলকার নাইন জাকারিয়া হায়দার শুভ্র, পলাশ আহমেদ ইমন, এনামুল হক প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গতপরশু অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম পারিবারিক প্রয়োজনে ২ দিনের ছুটিতে আলমডাঙ্গার দোয়ারপাড়াস্থ গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন। গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেও তিনি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় তিনি সস্ত্রীক এম সবেদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। বিদ্যালয়ে তিনি জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠা এটা নিজের ভেতর থাকতে হয়, এটা বাইরে থেকে কেউ চাপ দিয়ে শিক্ষা দেয়ার বিষয় না। পরিদর্শনকালে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত আইজিপিকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হয়। সে সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত আইজিপি’র সহধর্মিনী মিসেস খাদিজা ইসলাম মিরা, বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অতিরিক্ত আইজিপি’র সহোদর প্রফেসর তোফায়েল আহমেদ টুটুল, বিদ্যালয়ের সভাপতি আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এম সবেদ আলী, বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি’র সহোদর এনামুল হক, আক্কাস আলী। এছাড়াও বিকেলে তিনি আলমডাঙ্গা থানা পরিদর্শন করেন। সে সময় থানার কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।