ভালোকাজ যতো দ্রুত করা যায় ততোই ভালো

পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা শুধু অভিনবত্বই নয়, অতীব প্রয়োজনীয়। বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পরীক্ষা নেয়ার কারণে প্রতিবছর প্রায় আড়াই মাস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হয়। এমনিতেই বিদ্যালয়গুলোতে ছুটির পর ছুটি থাকে, তারপর যখন পরীক্ষার জন্য দীর্ঘদিন পাঠদান বন্ধ রাখতে হয়, তখন বুঝতে বাকি থাকে না ৩৬৫ দিনে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান ক’দিন হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক চরম এই বাস্তবতা উপলব্ধি করেই আড়াইশ’জন বসার উপযোগী পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাবনা প্রণয়নের পাশাপাশি স্থান নির্ধারণের জন্য উপযোগী জমি খুঁজতে ব্যস্ত। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে দেশের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা যে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে তা বলার অবকাশ রাখে না।
সুন্দর সমাজ গঠনের পূর্বশর্ত সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন। যা চাওয়া মাত্রই পাওয়া যায় না। পরিকল্পনার জন্য প্রয়োজন দূরদৃষ্টি। যাকে উদ্ভাবনী মেধাশক্তি বললেও বোধ হয় ভুল বলা হয় না। সমাজের জন্য ভালো কাজের অভাব নেই। যদিও সর্বক্ষেত্রে, দায়িত্বশীলদের সকলেই কর্মক্ষেত্রে অতোটা কর্মতৎপর হন না। কেউ কেউ হন। যার মধ্যে কর্মতৎপরতা পরিলক্ষিত হয় তাকে শুধু কোনো এক সময়ের কিছু মানুষ মনেই রাখে না, ইতিহাসও মূল্যায়ন করে। যুুগে যুগে কালের সাক্ষী হয়ে আছেন বহুমানুষ। তাদের রেখে যাওয়া কর্মযজ্ঞের উদাহরণই তো বর্তমানের প্রেরণা। যদিও তা থেকে ক’জনই আর শিক্ষা নিই। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক হিসেবে জিয়াউদ্দীন আহমেদ দায়িত্বভার গ্রহণের কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি তার যে উৎকর্ষ মেলে ধরেছেন বা ধরতে সক্ষম হয়েছেন তা ওই প্রেরণায় উদ্বুব্ধ বলার চেয়ে আশা জাগানিয়া মানুষ বলাই বোধ হয় ভালো। খেলার মাঠ জেগেছে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই অবৈধের ‘অ’ বিতাড়নের নানামুখি উদ্যোগ নিয়েছেন। সব উদ্যোগেই সম্মিলিত প্রচেষ্টার ছোঁয়া রয়েছে বলেই সফলতা মিলছে, মিলবে বলেও ধরে নেয়া যায়। সে হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় সকল প্রকারের পরীক্ষা নেয়ার জন্য পরীক্ষা কেন্দ্র গড়ে তোলা অসম্ভব নয়। অবসম্ভাবী উদ্যোগ ত্বরান্বিত করতে জনপ্রতিনিধিরাও নিশ্চয় সহযোগিতার হাত বাড়াবেন।
নেই নেই বলে হতাশায় হাবুডুবুু নয়, পারি এবং পারবো বলে পথ দেখানো মানুষের যে স্বল্পতা তা অস্বীকার করা যায় না। এরপরও সমাজ সুন্দরের দিকে তথা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছুনোর পথেই রয়েছে। এই পথ তখনই মসৃণ হয়, যখন উদ্যোগী কেউ তার উৎকর্ষের আলোছড়ায়। একটি পরীক্ষা কেন্দ্র থাকলে বিদ্যালয়গুলোর পাঠদানের সময় বাড়বে, হ্রাস পাবে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যয়। একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে উপজেলার সকল পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে পারলে পরিবেশের ভিন্নতা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠবে না, তেমনই স্বল্প লোকবলেই নির্বিঘেœ পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হবে। বাগড়া দেয়ার জন্য কারো কারো কাছে ভিন্নযুক্তি থাকতেই পারে। তবে বিতর্ক এড়িয়ে ভালোকাজ যতো দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায় ততোই মঙ্গল।