শৈলকুপায় বাঙালিদের প্রিয় জমজমাট পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত : ১০ গৃহবধূকে পুরস্কৃত

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: শীতের আকর্ষন খেজুর গুড়ের পিঠা পায়েস। আবহমানকাল থেকে বাঙালিদের আকর্ষন করে আসছে নানা প্রকার পিঠা। শীতে ধনী বা দরিদ্র সব শ্রেণি পেশার মানুষের বাড়িতে তৈরি করা হয় পিঠা। পিঠাকে আরও আকর্ষনীয় করতে ঝিনাইদহে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো জমজমাট পিঠা উৎসব। ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংস্কৃতি’ এ স্লোগানকে সামনে নিয়ে শৈলকুপা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম দুধসরে আয়োজন করা হয় এ পিঠা উৎসব। গত শনিবার দিনব্যাপী এ আয়োজনে ভিড় জমায় নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। দুধসর গ্রামের ডিজিটাল স্কুলের আয়োজনে পিঠা মেলায় এসেছিলো কৃষক, কৃষাণী ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। রকমারি পিঠার পসরা সাজিয়ে বসে ছিলেন ওই গ্রামের গৃহবধূরা। দেশীয় নানারকম পিঠার স্টল প্রদর্শন করেছেন তারা। তাদের পিঠার মধ্যে ছিলো, পাটিসাপটা, উষ্ণ গুঞ্জা, ফুলঝুরি, ভাজাপুলি, পানিদৌলা, পাকান পিঠা, বাঁধাকপির বড়া, সবজিভাঁপা, সেমাই রসগোল্লা, সেমাই কাটসেট, চুসিপিঠা, চন্দ্রপুলি, সরভাজা, ম্যারাপিঠাসহ প্রায় ৫০ রকমের পিঠা। পছন্দের পিঠা খেতে দূরদূরান্ত থেকে আসেন দর্শনার্থীরা। স্টলে স্টলে ঘুরে পিঠার স্বাদ গ্রহণ করেন আগতরা। পিঠা উৎসবে অংশগ্রহণকারী নাসরিন সুলতানা, আসমা খাতুন ও কল্পনা খাতুন বলেন, প্রতিবছর এ ধরনের আয়োজন করা হলে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবো। এছাড়া আমাদের বর্তমান প্রজন্ম বাঙালির ঐতিহ্যবাহী নানা পদের পিঠার স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে। পিঠা মেলার আকর্ষনে ঢাকা থেকে এসেছেন ওই গ্রামের বধূ সেলিনা জামান ও লাইলা ইমাম। তারা বলেন, এ ধরনের মনমাতানো পিঠা শহুরে জীবনে মেলে না। তাই গ্রামের নলেনগুড়ের পিঠার স্বাদ গ্রহণ করতে এখানে ছুটে এসেছি আমরা। বাড়তি আকর্ষন ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ডেকিন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. ফারা আজমাত। তিনি বলেন, পিঠা উৎসবে এসে আমি দারুন খুশি। বাঙালির ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ এলাকার মানুষ যে আয়োজন করেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। অনুষ্ঠানের আয়োজক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব এ গ্রামের সন্তান মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, জঙ্গিবাদ থেকে সমাজকে দূরে রাখতে আর নতুন প্রজন্মের মাঝে দেশীয় সংস্কৃতির পরিচয় করিয়ে দিতেই এ আয়োজন। এ পিঠা উৎসবে ৭১ স্টলে পিঠা প্রদর্শন করেন ওই গ্রামের দেড় শতাধিক গৃহবধূ। শেষে ১০জন গৃহবধূকে সেরা পিঠা রাধুনী হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়।