কুয়াশায় গুলিয়ে দিয়েছে রেলগাড়ির সময়সূচি : চরম দুর্ভোগে যাত্রী সাধারণ

চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা অধিকাংশ ভ্রমণকারীদের কাটছে অনিশ্চয়তার প্রহর
কামরুজ্জামান বেল্টু: দেশের পশ্চিম-দক্ষিণাঞ্চলে ট্রেনের সময়সূচি ভেঙে পড়েছে। ঘনকুয়াশার কারণে সময়ের নির্ঘণ্ট গুলিয়ে যাওয়ায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রেলের যাত্রী সাধারণকে। কখনকটার ট্রেন, কখন আসবে তার যেমন ঠিক ঠিকানা পাওয়া যচ্ছে না, তেমনই রেলগাড়িতে উঠে কখন গন্তব্যে পৌঁছুনো সম্ভব হবে তারও কোনো ঠিক থাকছে না। দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ ট্রেনই চলছে কয়েক ঘণ্টা বিলম্বে। গতকালও চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় অসংখ্য যাত্রী সাধারণকে অনিশ্চয়তার প্রহর গুণতে দেখা গেছে।
বর্তমান সরকারের রেলমন্ত্রণালয়ের নানামুখি উদ্যোগের ফলে যাত্রী সাধারণ যখন রেলভ্রমণের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছেন, ঠিক তখনই প্রকৃতি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিরাজমান ৮ দিনের শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে ঘনকুয়াশা শুধু রাতেই নয়, দিনেরও অধিকাংশ সময় ট্রেনচলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। ফলে প্রায় সব ট্রেনই চলছে নির্ধারিত সময়ের কয়েকঘণ্টা দেরিতে। যেমন- গতপরশু রাত ১১টা ২ মিনিটের সুন্দরবন চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছুয় ২ঘণ্টা ৩৬ মিনিট বিলম্বে ১টা ৩৮ মিনিটে। ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় দুমিনিটের মাথায়। ঊর্ধ্বমুখী সীমান্ত রাত ১১টা ৪৯ মিনিটে চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছুনোর কথা থাকলেও তা পৌঁছুয় ৩ঘণ্টা ৪ মিনিট দেরিতে। নকিশকাঁথা ভোর ৬টায় চুয়াডাঙ্গা পৌঁছে ২মিনিটের মাথায় গোয়ালন্দের উদ্দেশ্যে ছাড়ার কথা ছিলো, অথচ চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছুয় সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে। ঊর্ধ্বমুখী রূপসা সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছুনোর কথা থাকলেও তা পৌঁছুয় ১২টা ১৬ মিনিটে। ঢাকাগামী চিত্রা সকাল ১১টা ২২ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছুনোর কথা থাকলেও তা ২ঘণ্টা ২৩ মিনিট দেরিতে ১টা ৪৫ মিনিটে পৌঁছুয়। ঊর্ধ্বমুখী রকেটও গতকাল ২৮ মিনিট দেরিতে চলেছে। ২টা ১৫ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছুনোর কথা থাকলেও তা পৌঁছায় ২টা ৪৩ মিনিটে। মহানন্দ এক্সপ্রেস বিকেল সাড়ে ৩টায় চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছুনোর কথা থাকলেও তা পৌঁছুয় ১ঘণ্টা ৪৩ মিনিট দেরিতে। ঊর্ধ্বমুখী সাগরদাড়ি সন্ধ্যা ৭টায় চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছুনোর কথা থাকলেও তা পৌঁছুয় ৩৫ মিনিট বিলম্বে। নিম্মমুখী তথা খুলনাগামী কপোতাক্ষ ৫টায় চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছুনোর কথা থাকলেও তা পৌঁছায় ১৮মিনিট বিলম্বে। নি¤œগামী তথা খুলনাগামী রূপসা ২টা ৫৫ মিনিটে পৌঁছুনোর কথা থাকলেও তা পৌঁছায় ৩ঘণ্টা ২৫ মিনিট দেরিতে সাড়ে ৬টায়। খুলনাগামী নকশিকাঁথা বিকেল ৫টা ৪১ মিনিটে চুয়াডাঙ্গায় পৌছুনোর কথা থাকলেও তা পৌঁছুয় ৭টা ৫ মিনিটে। নি¤œমুখী রকেট সন্ধ্যা ৭টা ৫৪ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছুনোর কথা থাকলেও ৫ ঘণ্টা ৭ মিনিট লেটে রাত ১টা ১৩ মিনিটে পৌঁছায়। গতরাতে ঢাকাগামী সুন্দরবন ১১টায় এবং ঊর্ধ্বমুখী সীমান্ত ১১টা ৪৫ মিনিটে এবং খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছুনোর কথা ছিলো রাত ১টায়। গতরাত ১টায় শেখ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ট্রেনগুলো তিনঘণ্টা দেরিতে পৌঁছুবে বলে জানিয়েছিলেন স্টেশন মাস্টার আব্দুল খালেক। তিনি বলেছেন, কুয়শার কারণেই ট্রেনের সময়সূচিতে নেমে এসেছে এ বিপর্যয়। কারণ, ট্রেনের বিলম্ব শুধু দু একদিন ধরে নয়, বিরাজমান শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে ঘনকুয়াশা যেদিন থেকে শুরু হয়েছে সেদিন থেকেই।