চুয়াডাঙ্গায় জনযুদ্ধ পরিচয়ে হাসপাতালের ডাক্তারসহ ৩ জনের কাছে চাঁদা দাবি

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের প্রধান সহকারী আব্দুস সবুর ও স্টোরকিপার হাদিউজ্জামানের কাছে জনযুদ্ধ পরিচয় দিয়ে চাঁদা চাওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে মোবাইলফোনে তাদের কাছে চাঁদা চাওয়া হয়। জনৈক ব্যক্তি নিজেকে চরমপন্থি সংগঠন জনযুদ্ধের আঞ্চলিক কমান্ডার বিপ্লব পরিচয় দিয়ে চাঁদা চায়। চাঁদা না দিলে পরিবারসহ তাদেরকে খুনের হুমকি দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সদর হাসপাতালের আরএমও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগকারীরা জানান, মাস দুয়েক আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জয়েন্ট সেক্রেটারি পরিচয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে। এবার সুযোগ বুঝে একে একে ফোন করা হলো ৩জনের কাছে। বলা হলো, আমি জনযুদ্ধের আঞ্চলিক কমান্ডার ‘বিপ্লব’। দল চালাতে হলে আমাদের প্রচুর টাকার প্রয়োজন। তাই আপনারা দ্রুত টাকার ব্যবস্থা করেন। তা না হলে আপনিসহ আপনার পরিবারের সকলকে হত্যা করা হবে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। ০১৮৬৩-৬৯০৯৩৭ এ নাম্বার থেকে বেলা ১২টা ৩৭ মিনিটে প্রথমে ফোন করা হয় হাসপাতালের প্রধান সহকারী আব্দুস সবুরের কাছে। ঠিক তার ১৫ মিনিট পর ফোন করা হয় হাসপাতালের স্টোরকিপার হাদিউজ্জামানের কছে। বেলা ১টায় ফোন করা হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট এনেসথেসিয়া ডা. গোলাম মোর্শেদ ডালিমের কাছে। ৩ জনকে একই নাম্বার থেকে ফোন করা হয় এবং বলা হয়, আমি জনযুদ্ধের আঞ্চলিক কমান্ডার বিপ্লব বলছি। আমাদের দল চালাতে হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। তাই আপনাদেরকে টাকা দিতে হবে, তা না হলে আপনিসহ আপনার পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হবে। বিষয়টি নিয়ে ৩ জনের মধ্যে আতঙ্ক শুরু হয়। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবিরকে বিষয়টি জানালে তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি তোজাম্মেল হকের কাছে জানান। সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম বিষয়টি জানার পর জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদের সাথে আলাপ করেন। জেলা প্রশাসক থানায় লিখিত অভিযোগের জন্য পরামর্শ দেন এবং এর সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি তোজাম্মেল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে ফোনে জানিয়েছেন। আজ লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে দেখবো। এ ব্যপারে এরএমও ডা. শামীম কবির কিছু তথ্য দিয়ে বলেন, ২ মাস আগে হাসপাতালের ল্যান্ডফোনে একটি কল আসে। রিসিভ করেন হাসপাতালের অফিস সহকারী হাসিনুন নাহার। অপরপ্রান্ত থেকে বলা হয়, আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জয়েণ্ট সেক্রেটারি বলছি। একথা বলে তিনি হাসপাতালের সকল চিকিৎসকসহ সমস্ত স্টাফদের মোবাইল নাম্বার চাইলে তিনি ওই ব্যক্তিকে সকলের মোবাইল নাম্বার দেয়। এ ঘটনার পর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সকলের মাঝে মোবাইল আতঙ্ক বিরাজ করছে।