জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে কর্মকর্তাদের প্রস্তুত হতে বলেছে ইসি

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর বাকি থাকলেও আগেভাগে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রস্তুতি নিতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়ে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক বৈঠকে আগামী নির্বাচনের বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতকৃত ম্যানুয়াল প্রদান করা হয়। এ বিষয়ে ইসি সচিবালয় থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচনের আইনকানুন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মাঠ কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। যদিও কমিশন এটি ভোটার সংশোধনী কর্তৃপক্ষের জন্য একদিনের প্রশিক্ষণ বলছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ নিয়ে মূলত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আগামী জাতীয় নির্বাচনের নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রস্তুত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। তবে বৈঠকে বিগত সংসদ নির্বাচনের একটি করে ম্যানুয়াল সংশ্লিষ্টদের প্রদান করা হয়। বলা যেতে পারে এটি আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি। ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি বর্তমান দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হবে। সাংবিধানিকভাবে বিদ্যমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন পূর্বে নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই হিসাবে ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে গত বছরের ১৬ জুলাই কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্য নির্বাচন কমিশন রোডম্যাপ ঘোষণা করে। গতকালের বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্র জানায়, মাঠপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, আমরা ইচ্ছে করলে সকল নির্বাচন কর্মকর্তাদের রিভাইজিং অথরিটি করতে পারতাম। কিন্তু প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের আমরা নিয়েছি যাতে মানুষ ভালোভাবে বিষয়টি গ্রহণ করতে পারে, এ সম্পর্কে তারা জানতে পারেন। এ ছাড়া প্রশাসনের কর্মকর্তারা যেহেতু নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের সাথেও সম্পৃক্ত থাকেন, তাই তাদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। প্রশাসনের নতুনদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সারাবছর আমরা নির্বাচন নিয়ে কাজ করে থাকি। আমাদের সামনে সবসময় চ্যালেঞ্জ থাকে। আমাদের নির্বাচনটা সুষ্ঠু, সুন্দর, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে করার জন্য আপনাদের যথেষ্ট অবদান আছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের যে সব আইনকানুন আছে, আমাদের লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণকেন্দ্র প্রশাসক একাডেমি যাতে সেগুলো সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করে সেজন্য আমরা চিঠি দিয়েছি। বিশেষ করে প্রশাসন একাডেমিতে আমাদের নবীন কর্মকর্তা প্রথম থেকেই যাতে আমাদের নির্বাচনী আইনকানুন সম্পর্কে অবহিত হতে পারেন। বৈঠক সূত্র জানায়, প্রশিক্ষণে নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও প্রশাসনের তিন শতাধিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ আরও জানান, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের আমরা একদিনের একটি ব্রিফিং দিয়েছি, এই খসড়া ভোটার তালিকাটি সঠিকভাবে যাতে রূপ পায়। এই ভোটার তালিকার উপরেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সুতরাং আমরা চাই সামনে যে ভোটার তালিকাটি হবে সেটি যাতে নির্ভুল হয়।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাজেটের আকার বাড়ছে। প্রতি পাঁচবছরে এই বৃদ্ধির হার একশ কোটি টাকা করে। গত নির্বাচনে পাঁচশ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হলেও আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ছয়শ কোটি টাকা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য ব্যয়ের খাত ধরা হয়েছে ২৯টি। তবে নির্বাচন পরিচালনা খাতের খতিয়ান বড় হলেও সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয় আইনশৃঙ্খলায়।