শিলাইদহ কুঠিবাড়ি ও লালনের মাজার পরিদর্শন করলেন রাষ্ট্রপতি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ি ও সাধক লালন শাহের মাজার ঘুরে দেখলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিকেলে তিনি কুঠিবাড়ি পরিদর্শন, ফুলগাছের চারা রোপণ ও গান শুনে প্রায় একঘণ্টা সময় অতিবাহিত করেন। পরে সন্ধ্যায় বাউল সাধক ফকির লালন শাহের ছেঁউড়িয়াস্থ মাজার পরিদর্শন ও মনমুগ্ধকর লালন সঙ্গীত উপভোগ করেন।

দু’দিনব্যাপী সফরের প্রথমদিন শনিবার দুপুরে হেলিকপ্টারযোগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কুষ্টিয়া স্টেডিয়ামে অবতরণ করেন। পরে তিনি সার্কিট হাউস পৌছে মধাহ্নভোজের পর সড়ক পথে আসেন শিলাইদহের কুঠিবাড়ি। কুঠিবাড়িতে বিকেল ৪টায় পৌঁছার পর সেখানে রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানান প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

রাষ্ট্রপতি কুঠিবাড়ির ভেতরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহৃত সামগ্রী ও দেয়ালে সংরক্ষিত বিভিন্ন ছবি ঘুরে ঘুরে দেখেন। রাষ্ট্রপতি পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন এবং এরপর তিনি কুঠিবাড়ির পশ্চিম পাশে বকুলতলার ঘাটে বকুলফুলের একটি চারা রোপণ করেন। চারা রোপন শেষে রাষ্ট্রপতির সম্মানে পুকুরপাড়ে বকুলতলার ঘাটে স্থানীয় ছয়জন শিল্পীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় গানের আসর। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে’ উদ্বোধনী এই সংগীতসহ মোট ৪টি গান শোনেন রাষ্ট্রপতি। গান শুনে রাষ্ট্রপতি মুগ্ধ হন এবং শিল্পীদের নগদ ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেন। এরপর রাষ্ট্রপতি বিকেল পাঁচটার দিকে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি থেকে কুষ্টিয়া সার্কিট হাউসের উদ্দেশে রওনা হন। এরপর সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ছেঁউড়িয়াস্থ আখড়া বাড়িতে আসেন। এখানে পৌঁছার পর তিনি লালনের মাজার ঘুরে দেখেন এবং অডিটোরিয়ামে আয়োজিত গানের অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। পরে তিনি সার্কিট হাউজে পৌঁছে রাতে পেশাজীবীসহ গণ্যমান্য বক্তিবর্গের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত ও মতবিনিমিয় করেন। রাষ্ট্রপতির সফর সঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন স্ত্রী মিসেস রাশিদা খানম, ছেলে সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক ও মেয়ে স্বর্ণা হামিদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি মাহবুব-উল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া-৪ আসনের এমপি আবদুর রউফ, জেলা প্রশাসক জহির রায়হান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি রবিউল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর পর অনুষ্ঠেয় চতুর্থ সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি যোগদান করবেন। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করবেন। এছাড়া সমাবর্তন শেষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর মুর‌্যাল, পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম ওয়াজেদ মিঞা বিজ্ঞানভবন, শেখ হাসিনা হলের বর্ধিতাংশ ও শেখ রাসেল হল উদ্বোধন করবেন।