বাল্যবিয়ের সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে

চুয়াডাঙ্গায় বাল্যবিয়ে নিরোধ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহামেদ

স্টাফ রিপোর্টার: বাল্যবিয়ের ফলে একদিকে যেমন আত্মহত্যা, বিবাহ বিচ্ছেদ, বহু বিবাহ, যৌতুক ও নারী নির্যাতন বৃদ্ধি পায় অপরদিকে নারী শিক্ষা বৃদ্ধির হার বাধাগ্রস্ত করে। বাল্যবিয়েতে চুয়াডাঙ্গা জেলা দেশের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে তেমনি বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে ৪র্থ অবস্থানে রয়েছে। আমাদের দেশের অবিভাবকগণ মনে করেন মেয়েকে ছোটবেলায় দিলে দরিদ্রতা কমে যাবে কিন্তু দেখা যায় এর ফলে দরিদ্রতা বৃদ্ধি পায়। নোটারি পাবলিকেশনের মাধ্যমে বয়স বাড়ানো গ্রহণযোগ্য নয় এবং এর কোনো বৈধতা নেই। এরপরেও অবিভাবকগণ তাদের মেয়েদের গোপনে বাল্যবিয়ে দিচ্ছে। বাল্যবিয়ে দিয়ে আর পার পাওয়া যাবে না। সংবাদ পেলে বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হবে। আর অসচেতনতা নয়, যারা বাল্যবিয়ের সাথে যুক্ত থাকবে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের টেনিস ক্লাব সভাকক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও এডাব জেলা কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত বাল্যবিয়ে নিরোধ শীর্ষক মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহামেদ উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, আইনে ছেলে মেয়ে পিতা, আত্মীয়স্বজন অথবা কোনো ব্যক্তি বিয়ে কার্য সম্পাদন, সহযোগিতা কিম্বা অনুমতি বা নির্দেশ প্রদান করলে অনধিক ২বছর ও সর্বনি¤œ ৬মাস কারাদ- বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে। অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদ-ে দ-িত হবেন। আবার যদি কোনো রেজিস্টার বাল্যবিয়ে পড়ান বা নিবন্ধন করেন তবে তার লাইসেন্স বাতিলসহ অনুরূপ শাস্তির বিধান আছে বলে কাজিদের সতর্ক করে দেন। বর্তমানে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে কোনো এলাকায় বাল্যবিয়ে সম্পাদন হলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দায়ি থাকবেন।
চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এডাব চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির সভাপতি বিল্লাল হোসেন, ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক এবিএম রবিউল ইসলাম, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আব্দুল আওয়াল। এডাব জেলা কমিটির সম্পাদক ও পাস’র নির্বাহী পরিচালক ইলিয়াস হোসেনের উপস্থাপনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এডাব খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী রেজাউল করিম। বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ২০১৭ উপস্থাপন করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক জহির রায়হান। বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি (তদন্ত) গোলাম মোহাম্মদ, শংকরচন্দ্র ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান, পদ্মবিলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের বিশ্বাস, তিতুদহ ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন, আলুকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইসলাম উদ্দিন, আত্মবিশ্বাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহেদ হাসান হালিম, রিসোর সমন্বয়কারী দারুল ইসলাম, আকাঙ্খার নির্বাহী পরিচালক শাহিন সুলতানা মিলি, জেলা কাজি সমিতির সভাপতি রবিউল হক, সেক্রেটারি সামসুল হক, সদর উপজেলা জামে মসজিদের ঈমাম রেজাউল করিম, কুলচারা জামে মসজিদের ঈমাম মোশারফ হোসেন, জেলা লোকমোর্চার সচিব কানিজ সুলতানা প্রমুখ। এ সময় চুয়াডাঙ্গা সদরের আলুকদিয়া ইউনিয়নকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ইউনিয়ন ঘোষণা করা হয়।