জীবননগর সুষ্ঠু পরিবেশে তিনটি ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন
এম আর বাবু/সালাউদ্দীন কাজল/নারায়ণ ভৌমিক: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী, মনোহরপুর ও কেডিকে ইউনিয়নের ২৭টি কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা হতে সুষ্ঠু ও উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রেই মহিলা ভোটারের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। পাশাপাশি পুরুষ ভোটারের উপস্থিতি ছিলো কম। দুপুরের পর পুরুষ ভোটারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।
উথলী বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, বেলা ১১টা পর্যন্ত তার কেন্দ্রে ২৫ ভাগ ভোট পোলিং হয়েছে। অন্যান্য কেন্দ্রেও ভোট পোলিঙের হার অনুরূপ। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারীর মধ্যে এ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বেলা ১২টা পর্যন্ত কোনো ভোট কেন্দ্র থেকে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভোট কেন্দ্রের বাইরে প্রতিদ্বন্দ্বী এক প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী স্লোগান দেয়ায় চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার ফরহাদ আহমদ ৩ জনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন। মনোহরপুর কেন্দ্র থেকে আটককৃতরা হচ্ছেন- ইনামুল হক ইনা, তারেক ও স্বপন। তাদেরকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তাফিজুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার ফরহাদ আহমদ, জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ডেন্ট আশাদুর রহমান, এনএসআইয়ের উপপরিচালক জাফর ইকবাল ও ইউএনও সেলিম রেজা প্রমুখ ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিসসূত্রে জানা যায়, উথলী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ ধানের শীষ প্রতীকে ৪ হাজার ৪৫৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আব্দুল হান্নান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ১৮৯ ভোট। এছাড়াও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আবজালুর রহমান ধীরু আনারস প্রতীকে ১ হাজার ৭২৯ ভোট, বিএনপির বিদ্রোহী আসাদুর রহমান ভেদু চশমা প্রতীকে ৫৩৮ ভোট ও জামায়াত সমর্থিত মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৮০১ ভোট।
সংরক্ষিত আসনে ১, ২ ও ৩ নং ওর্য়াডে আঞ্জু আরা আক্তার বই প্রতীকে ২ হাজার ৯৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম ফেরদৌসী আক্তার বক প্রতীকে পেয়েছেন ৭৩৩ ভোট। ৪, ৫ ও ৬ নং ওর্য়াডে জয়নাব বেগম জিরাফ প্রতীকে ১ হাজার ২৬৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম সাহেরা বেগম কলম প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ১৮ ভোট। ৭, ৮ ও ৯ নং ওর্য়াডে মরিয়ম মাইক প্রতীকে ১ হাজার ১২৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম নুর জাহান বেগম জিরাফ প্রতীকে পেয়েছেন ৯২০ ভোট।
১নং ওয়ার্ডে জহুরুল হক ভ্যানগাড়ি প্রতীকে ৫৯১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম মিজানুর রহমান টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৪৮ ভোট। ২নং ওর্য়াডে মঈনুল হাসান টিউবওয়েল প্রতীকে ১ হাজার ৩৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম নাজমুল হুসাইন মোরগ প্রতীকে পেয়েছেন ৬৫৪ ভোট। ৩ নং ওর্য়াডে ওবাইদুর রহমান আপেল প্রতীকে ২৭৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম আবু ছায়েম বিশ্বাস টিউবওয়েল প্রতীকে ২৫৩ ও মিজানুর রহমান ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ২৫৩ ভোট। ৪ নং ওর্য়াডে মাহতাব উদ্দিন বিশ্বাস মোরগ প্রতীকে ৭২১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম রাসেল হোসেন ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ৪৯৮ ভোট। ৫নং ওর্য়াডে আরমান আলী ঘুড়ি প্রতীকে ২৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম তানজার আলী টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ২৭৯ ভোট। ৬নং ওর্য়াডে আশারাফুল ইসলাম মোরগ প্রতীকে ৪০৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম বিল্লাল হোসেন আপেল প্রতীকে পেয়েছেন ১৭৮ ভোট। ৭নং ওয়ার্ডে আলতাফ টিউবওয়েল প্রতীকে ৩৩৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম মহিবুল হক ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ২২৭ ভোট। ৮ নং ওয়ার্ডে সেলিম রেজা মোরগ প্রতীকে ৪৬৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম আব্দুস সাত্তার তালা প্রতীকে পেয়েছেন ২৯৪ ভোট ও ৯ নং ওয়ার্ডে আমিনুল ক্রিকেট ব্যাট প্রতীকে ৩১৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম মনিরুল ইসলাম ঘুড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ২৩৩ ভোট।
মনোহরপুর ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সোহরাব হোসেন খান সুরুদ্দিন নৌকা প্রতীকে ৩ হাজার ৮০১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম বিএনপির কামরুজ্জামান ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৪০ ভোট। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী রাজা মিয়া আনারস প্রতীকে ১ হাজার ৮৬৭ ও জামায়াত ইসলামী সমর্থিত আসাবুল হক মল্লিক মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছেন ৬৩১ ভোট।
১, ২ ও ৩ নং সংরক্ষিত আসনে হাবিবা খাতুন কলম প্রতীকে ১ হাজার ৬৯৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী জলিমা খাতুন জিরাফ প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ২০৩ ভোট। ৪, ৫ ও ৬ নং সংরক্ষিত আসনে রাশিদা খাতুন সূর্যমুখী ফুল প্রতীকে ৯৪৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম সেলিনা তালগাছ প্রতীকে পেয়েছেন ৮১৯ ভোট। ৭, ৮ ও নং সংরক্ষিত আসনে জাহিমা খাতুন বক প্রতীকে ১ হাজার ৫৬৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম হাচিনা খাতুন জিরাফ প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৩৩৭ ভোট।
সাধারণ ১নং ওয়ার্ডে গোলাম রসুল ফুটবল প্রতীকে ৪৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম আব্দুর রশিদ মোরগ প্রতীকে পেয়েছেন ৪৮১ ভোট। ২নং ওয়ার্ডে জাফিরুল ইসলাম টিউবওয়েল প্রতীকে ৫৩৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম সাইফুল ইসলাম মোরগ প্রতীকে পেয়েছেন ৪১৫ ভোট। ৩নং ওয়ার্ডে রিপন হোসেন ফুটবল প্রতীকে ২০১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম জাহাঙ্গীর ম-ল টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ১৯৪ ভোট। ৪নং ওয়ার্ডে চামেলী বেগম টিউবওয়েল প্রতীকে ২১০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম শুকুর আলী মোরগ প্রতীকে পেয়েছেন ২০৪ ভোট। ৫নং ওর্য়াডে আবু সাঈদ ফুটবল প্রতীকে ৫৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সিরাজুল ইসলাম মোরগ প্রতীকে পেয়েছেন ১৬৮ ভোট। ৬নং ওয়ার্ডে জাহিদুল আলম তালা প্রতীকে ৫২৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম দোজা উদ্দিন মোরগ প্রতীকে পেয়েছেন ৪৬৪ ভোট। ৭নং ওয়ার্ডে আহসান হাবিব ফুটবল প্রতীকে ৪৭৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম আতিয়ার রহমান তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৩৯ ভোট। ৮ নং ওয়ার্ডে মিনারুল ইসলাম মোরগ প্রতীকে ৪১০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম আমিনুল ইসলাম সরদার বৈদ্যুতিক পাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯৫ ভোট ও ৯নং ওয়ার্ডে কামরুজ্জামান টিউবওয়েল প্রতীকে ২৯৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম ইব্রাহিম আলম মোরগ প্রতীকে পেয়েছেন ২৭৯ ভোট।
কেডিকে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের খায়রুল বাশার শিপলু নৌকা প্রতীকে ৪ হাজার ৫০৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম বিএনপির তানভীর হোসেন রাজীব ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৪২ ভোট। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আবুল বাসার টুটুল আনারস প্রতীকে ৫৫ ভোট, জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত মাওলানা আব্দুস সাত্তার মোটরসাইকেল প্রতীকে ১ হাজার ৬৫ ভোট ও আওয়ামী লীগের অপর বিদ্রোহী আলমগীর হোসেন চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ৮৮৯ ভোট।
সংরক্ষিত ১,২ ও ৩ নং সংরক্ষিত আসনে শিরীনা খাতুন হেলিকপ্টার প্রতীকে ১ হাজার ৩৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম রশিদা খাতুন মাইক প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ১৪৭ ভোট এবং ৪, ৫ ও ৬ নং সংরক্ষিত আসনে আশুরা খাতুন মাইক প্রতীকে ৯২৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম কহিনুর বেগম সূর্যমুখী ফুল প্রতীকে পেয়েছেন ৯১৪ ভোট এবং ৭, ৮ ও ৯ নং সংরক্ষিত আসনে জোছনা খাতুন হেলিকপ্টার প্রতীকে ১ হাজার ৪৩২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম স্বপ্না খাতুন মাইক প্রতীকে পেয়েছেন ১ হাজার ৩৯৪ ভোট।
সাধারণ ১ নং ওয়ার্ডে খাসিয়ার রহমান মিঠু মোরগ প্রতীকে ৩৫১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম লিটন হোসেন ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ২৭৭ ভোট। ২ নং ওয়ার্ডে দলুরদ্দীন দুলাল তালা প্রতীকে ৪১৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম কবির হোসেন ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৮০ ভোট। ৩ নং ওয়ার্ডে আশাদুল হক মালিতা ফুটবল প্রতীকে ৪৫৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম সাইদুর রহমান তালা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬৯ ভোট। ৪নং ওয়ার্ডে ওমেদুল হক আপেল প্রতীকে ৩৩২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম বাবলু তালা প্রতীকে পেয়েছেন ২১২ ভোট। ৫নং ওয়ার্ডে কাইদার আলী ফুটবল প্রতীকে ৬৯০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সৈয়দ আলী মুল্লা মোরগ প্রতীকে পেয়েছেন ৪৬১ ভোট। ৬নং ওয়ার্ডে নিজাম উদ্দিন মোল্লা টিউবওয়েল প্রতীকে ২৯৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম রুবেল হোসেন ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ২০৮ ভোট। ৭নং ওয়ার্ডে মহিবুল হক টিউবওয়েল প্রতীকে ৪৪৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম বজলুর রহমান টুটু মোরগ প্রতীকে পেয়েছেন ৪৩১ ভোট। ৮নং ওয়ার্ডে ইসরাইল বিশ্বাস ফুটবল প্রতীকে ৪৬১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম সুজ্জল হোসেন টিউবওয়েল প্রতীকে পেয়েছেন ১৬৫ ভোট ও ৯ নং ওর্য়াডে আবুল কালাম আজাদ তালা প্রতীকে ৩৬৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম বিপ্লব মোরগ প্রতীকে পেয়েছেন ৩১১ ভোট। উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোতাওয়াক্কিল রহমান রাত ৯ টার দিকে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।