মেহেরপুর জেলায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড’র অফিস স্থাপনের দাবি দীর্ঘদিনের

স্টাফ রিপোর্টার: মানব সৃষ্ট বিভিন্ন কর্মকা-ের কারণে জলবায়ু পরিবর্তন এবং তার প্রভাব বাংলাদেশের মতো উপকুলীয় দেশগুলোতে চরম আকারে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। যার ফলে এদেশের জনগণ প্রতিনিয়ত বন্যা, নদী ভাঙন, খরা, জলোচ্ছ্বাস, সুপেয় পানির হাহাকার, ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের ১০টি জেলা ‘প্রতিটি শুষ্ক মরসুমে ভয়াবহ সুপেয় পানি সঙ্কট ও ভূ-পৃষ্ঠে পানি পাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে।’ এক সময়ের খর¯্রােতা নদী এখন মৃত খালে, আর খাল ছোট ড্রেনে পরিণত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাজধানী মেহেরপুর জেলাটি। বর্তমান সরকার ব্রিটিশ আমলের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নীলকরদের আমঝুপির নীলকুঠি, সাহারবাটি-ভাটপাড়ার নীলকুঠি ও বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাজধানী মুজিবনগরের বৈদ্যনাত তলার আ¤্রকানন পর্যটন জেলা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। জেলার প্রধান ছোট-বড় নদ-নদীসহ খাল-বিল, জলাভূমি এবং প্লাবন ভূমির সংখ্যা-১১৪৩টি। কৃষি ও মৎস নির্ভর মেহেরপুর জেলায় রয়েছে ৬১ হাজার হেক্টর কৃষি জমি। এর মধ্যে ভৈরবনদ পুনঃখনন হলেও কাজলা, ছেউটুয়াসহ ছোট-বড় নদী-নালা, জলাভূমি, খাল-বিলগুলো পুনঃখনন না হওয়াতে-নাব্যতা সঙ্কট, অবৈধ বালু উত্তোলন, ভূমি দস্যুরা অবৈধ নদীর পাড় দখল করে স্থাপনা নির্মাণ ও পানির লেয়ার গভীরে চলে যাওয়ায় ‘সুপেয় পানির’ চরম সঙ্কটে পড়েছে। বাড়ছে আর্সেনিকোসিস রোগীর সংখ্যা। এ সকল সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে মেহেরপুর জেলার সর্বস্তরের জনগণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটি বিভিন্ন ফোরামে মেহেরপুর জেলায় ‘বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড’র একটি স্থায়ী অফিস স্থাপনে দাবি জানিয়ে আসছেন। সেবামূলক সকল অফিস থাকলেও স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার ও স্বাধীনতার স্থাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া ‘বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড’র অফিস দেশের ৮টি বিভাগের সকল জেলায় রয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও মেহেরপুর জেলাতে স্থাপন হয়নি বাপাউবো’র একটি স্থায়ী অফিস। তাই মেহেরপুর জেলাতে অতিগুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড’র অফিস স্থাপন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। যার ফলে মেহেরপুর জেলার নদ-নদী, খাল-বিল, জলাশয়-জলমহলগুলো পুনঃখনন হবে নিয়মিত, সুপেয় পানির নতুন জলধারা সৃষ্টি হবে, লক্ষাধিক জেলে (মৎস) পরিবার উপকৃত হবে, খাদ্য নির্ভরশীল দেশ গঠন সহজ হবে। ভূমি দস্যুদের কাছ থেকে অবৈধ নদীর পাড় উদ্ধারসহ জাতীয় উৎপাদন এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা করছে এ জেলার সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।