যশোরে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন : নিহত ২

যশোর প্রতিনিধি: যশোরে অনুমোদনহীন ওয়েল্ডিং কারখানায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। যশোর সদর উপজেলার কিসমত নওয়াপাড়া এলাকায় ঢাকা-মাগুরা মহাসড়কে সোমবার রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রাত ৯টায় নওয়াপাড়া এলাকার রজনীগন্ধা ফিলিং স্টেশনের পাশে সুমন নামের এক ব্যক্তির গাড়ি মেরামতের কারখানায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর আগুন কারখানায় থাকা পেট্রল, লুব্রিকেন্টসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থে ছড়িয়ে পড়ে। ভয়াবহ আগুনে দগ্ধ হয়ে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করা দুজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি। আগুনে মেরামতের জন্য ওই কারখানায় রাখা দু’টি কাভার্ড ভ্যান, দু’টি ট্রাক ও একটি প্রাইভেট গাড়ি পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডের কারণে রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিলো। কোতোয়ালি থানার ওসি একেএম আজমল হুদা বলেন, ভস্মীভূত কাভার্ডভ্যানের নিচ থেকে দুটি পোড়া লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তাদের নাম পরিচয় তাৎক্ষনিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে নিহত দুজন ওই গ্যারেজের শ্রমিক। যশোর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অগ্নিকাণ্ডের সময় আহত যশোর সদর উপজেলা বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের শফিয়ার রহমানের ছেলে কাভার্ডভ্যানের সুপারভাইজার কবির হোসেন, একই উপজেলার রাহেলাপুরের আলম হোসেনের ছেলে ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি আশরাফুর রহমানসহ ৫জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চিকিৎসক আব্দুর রশিদ জানান, আগুনে পুড়ে আহত কবির হোসেনের অবস্থা খুব খারাপ। এজন্য তাকে  ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, বেনাপোল থেকে আসা ক্যামিকেল ভর্তি একটি কাভার্ড ভ্যান ঝালাই করা হচ্ছিলো স্থানীয় বিপুলের গ্যারেজে। এসময় আগুনের ফুলকি ছিটকে গিয়ে কাভার্ডভ্যানটিতে আগুন লাগে। দ্রুত তা অন্য যানবাহনগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস যশোরের সহকারী পরিচালক পরিমল চন্দ্র কুণ্ডু বলেন, ওই কারখানায় ওয়েল্ডিং করার সময়ে অজ্ঞাত কারণে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। মূহুর্তে সেখান থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে দাহ্য পদার্থে। আগুনে কারখানার দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। তিনি জানান, এ ধরনের কাজের জন্য ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন লাগে। কিন্তু ওই কারখানার সেই অনুমোদন নেই। যশোর, ঝিকরগাছা, মনিরামপুর ও অভয়নগরের ফায়ার স্টেশনগুলোও অগ্নিনির্বাপনের কাজে অংশ নেয়। এসময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তিনি জানান, কাভার্ড ভ্যানগুলোতে ক্যামিকেল থাকায় আগুন নেভাতে অনেক দেরি হয়েছে।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যশোর-মাগুরা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় সড়কের দু’ধারে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার পর ঘটনাস্থলে ছুটে যান যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, স্থানীয় সরকার যশোরের উপপরিচালক মাজেদুর রহমান খান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।