সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা শেষ : সরাসরি বাস চলাচল অনিশ্চিত

মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের যৌথ বৈঠক

মেহেরপুর অফিস: প্রায় একমাস পরে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি এবং মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা মোটরশ্রমিক ইউনিয়ন যৌথ সভায় বসলেও কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই তা শেষ হয়েছে। এতে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে সরাসরি বাস চলাচলে আশার আলো জাগলেও তা সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হওয়ায় মেহেরপুর জেলার প্রায় ৭ লাখ লোকের আশার প্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছে।
গতকাল রোববার বেলা ২টায় মেহেরপুর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মেহেরপুর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি ও চুয়াডাঙ্গা বাস মালিক গ্রুপ এবং মেহেরপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন ও চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মকর্তাবৃন্দ যৌথসভায় অংশ গ্রহণ করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন মেহেরপুর জেলা বাস-মিনিাস মালিক সমিতির সভাপতি জহিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি সালাউদ্দিন মিয়া, সহসভাপতি মোজাম্মেল হক, মেহেরপুর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ মো. গোলাম রসুল, চুয়াডাঙ্গা বাস-মালিক গ্রুপের সহসভাপতি আবুল কালাম, মেহেরপুর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সড়ক সম্পাদক হাসিবুল হক, চুয়াডাঙ্গা বাস মালিক গ্রুপের সাংগাঠনিক সম্পাদক আমির খসরু, যুগ্মসম্পাদক বদর উদ্দিন, চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, মেহেরপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আহসান হাবিব সোনা, চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রিপন ম-ল, মেহেরপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান, শ্রমিক কল্যাণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সবুজ প্রমুখ। বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলে যৌথসভা। সভায় মেহেরপুর মালিক-শ্রমিক দাবি করে বলেছে শ্রমিকদের মারধরের জন্য চুয়াডাঙ্গার সময় নিয়ন্ত্রক সেতু ও বিদ্যুতের বিচার চেয়ে তাদের দু’জনের অপসারণের দাবি করা হয়। এতে চুয়াডাঙ্গা বাস মালিক গ্রুপের সদস্যরা তাদের দু’জনের অন্য সড়কে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। এছাড়া মেহেরপুর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি পূর্বের ন্যায় একটি মেহেরপুর ও একটি করে চুয়াডাঙ্গা জেলার বাস-মিনিবাস চলাচলের দাবি জানান। কিন্তু চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রিপন ম-ল বিরোধিতা করে বলেন, এভাবে আমার শ্রমিকরা গাড়ি চলাবে না, চালালে মালিকরা নিজ দায়িত্বে চালাবেন। তিনি এক ঘণ্টা অন্তর অন্তর চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার বাস চলাচলে অনড় থাকেন। ফলে একঘণ্টার আলোচনাসভার ফলাফল শূন্য থেকে যায়। অনিশ্চিত হয়ে পড়ে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কে বাস চলাচল। অবশেষে চুয়াডাঙ্গা বাস মালিক গ্রুপ ও চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই মেহেরপুর ত্যাগ করেন। তবে তারা জানিয়ে যান- আজ সোমবার চুয়াডাঙ্গা বাস মালিক গ্রুপের অভিষেক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অভিষেক শেষে নতুন কমিটির সাথে এসব বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর মেহেরপুরের বাস-মালিক সমিতির লোকাল বাস মালিক আলমগীর হোসেন তার অসুস্থ বাবাকে নিয়ে মাগুরা সদর হাসপাতালে থেরাপি দিতে যান। ফেরার পথে চুয়াডাঙ্গার দৌলাতদিয়াড় এলাকায় চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা চালককে মারধর করে। এ সময় মেহেরপুর বাস মালিক আলমগীর হোসেন প্রতিবাদ করলে তাকেও শ্রমিকরা অকথ্য ভাষায় গালি দেন। পরবর্তীতে মেহেরপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন মেহেরপুর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির কাছে অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে মেহেরপুর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা বাস মালিক গ্রুপের কাছে বিচার দাবি করেন। কিন্তু তারা কোনো বিচার না করায় সেই থেকে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা জেলার সরাসরি বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে মেহেরপুর জেলার চাষি ও সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েন।