নারায়ণ ভৌমিক: ট্রেন ও বাস যাত্রীরা প্রতারক চক্র থেকে সাবধান। আপনার প্রয়োজনে চলতি পথে আপনার আশপাশে ঘুরঘুর করছে পকেটমারসহ প্রতারক চক্র। সুযোগ পেলেই কৌশলে এরা হাতিয়ে নেবে টাকা ও সোনার গহনাসহ মূল্যবান সামগ্রী। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় ডাউন খুলনা অভিমুখে আন্তঃনগর সাগরদাড়ি ট্রেনটি দর্শনা রেল স্টেশনে কয়েক মিনিট যাত্রাবিরতী করে। এরই মধ্যে হুড়োহুড়ি করে ট্রেনে উঠতে গিয়ে ট্রেনযাত্রী মিঠু রানী রায়সহ কয়েকজন যাত্রীর নিকট চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে নগদ টাকা, সেনোর গহনাসহ মূল্যবান সামগ্রী। নগদ টাকা ও সেনোর গহনা হারিয়ে যাত্রীরা ট্রেনের মধ্যে চিৎকার চেঁচামেচি করে সর্বস্ব হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে ট্রেন যাত্রীদের মধ্যে আতষ্ক ছড়িয়ে পড়ে। চক্রটির টার্গেট জনবহুল ট্রেন বা বাস স্ট্যান্ডে ভীড় জমিয়ে যাত্রী উঠা নামার মধ্যে কৌশলে হাতিয়ে নেয় যাত্রীর ব্যাগ, রক্ষিত নগদ টাকা, সোনার গহনা ও মোবাইলফোনসহ মূল্যবান সামগ্রী। এদের টার্গেট মিস হলে যাত্রীর পাশে বসে ভদ্রবেশী প্রতারক চক্রের সদস্যরা খাতির বা পিরিত জমিয়ে কোমল পানীয়, বিস্কুট, ভাজা, সিগারেট, ডিম, শসা, মলম, মসলাসহ লোভনীয় খাদ্যদ্রব্য খাইয়ে ও মাখিয়ে লুটে নিচ্ছে যাত্রীর সর্বস্ব। একটু অন্যমনষ্ক হলে চোখের পলকে ব্যাগ-ব্যাগেজ টান দিয়ে পালাবে। এরা ট্রেনে ব্যাগ টানা পার্টি হিসেবে পরিচিত। এ টার্গেট মিস হলে অন্য এলাকার পার্টির সদস্যদের যাত্রীর তথ্য ও টার্গেট দিয়ে সহযোগিতা করে। তথ্য অনুসন্ধান নিয়ে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা, পোড়াদহ ও যশোর রেলস্টেশনে রয়েছে ৩টি চক্র। এদের বয়স বিশ, পচিঁশের কোঠায়। প্রতিদিন আন্ত:নগর আপ ও ডাউন ট্রেনসহ যাত্রী বহুল বিভিন্ন ট্রেন ও বাসে এ চক্রটির রয়েছে অবাধ চলাচল। সূত্র জানায়, ৩টি চক্রের রয়েছে সীমানা নির্ধারণ। অন্য এলাকার পার্টি সদস্যরা সীমানার বাইরে গিয়ে কাজ করলে তাদের দিতে হবে ভাগবাটোয়ারা। খুলনা, যশোর, কোটচাঁদপুর, দর্শনা, চুয়াডাঙ্গা, আলমডাঙ্গা, পোড়াদহ, ঈশ্বরদী, নাটোর, রাজশাহী, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জনবহুল স্টেশনে এদের রয়েছে অবাধ চলাচল। ট্রেনে নিয়োজিত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীসহ জিআরপি পুলিশ এ চক্রটি সম্পর্কে জ্ঞাত বলে সূত্রটি দাবি করছেন। যাত্রীরা সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হলেও সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের তৎপরতা যাত্রীদের নিরাপত্তায় তেমন লক্ষ্যণীয় নয় বলে ভুক্তভোগী যাত্রী সাধারণের অভিযোগ।