চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সদস্য মাহাবুব চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতার

ডিঙ্গেদহ প্রতিনিধি: চাঁদাবাজি মামলায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সদস্য মাহাবুবুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ। গত বুধবার বেলা আনুমানিক ১১টায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানার সামনে ঘোরাফেরা করার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে কুতুবপুর ইউনিয়নের শম্ভুনগর গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে। এ ব্যাপারে তিতুদহ গ্রামের আব্দুল হামিদের মেয়ে পাপিয়া সারোয়ার জানান, গিরিসনগর গ্রামের মৃত কালু ম-লের ছেলে মনিরুজ্জামানের সাথে তার বিয়ে হয়। সংসারে তাদের দু’পুত্র সন্তান আছে। মামলার আসামি শম্ভুনগর গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে মাহাবুবুর রহমান স্বামী মনিরুজ্জামানের বন্ধু। এর সূত্র ধরে প্রায় তাদের বাড়িতে যাতায়াত করতো মাহাবুব। এক পর্যায়ে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে পূর্বের স্বামী মনিরুজ্জামানকে তালাক করিয়ে মাহাবুব তাকে বিয়ে করেন। এরপর দুজনে ডিঙ্গেদহ বাজারে বাবু মিয়ার ঘর ভাড়া করে বসবাস করতে থাকে। এ সময় নির্বাচনের খরচ ও ব্যবসা করার জন্য মাহাবুব মেম্বার পাপিয়ার পিতা আ: হামিদের নিকট হতে ধার বাবদ টাকা গ্রহণ করেন। এর কিছুদিন পর মাহাবুব মেম্বার পরিচয় গোপন করে পাপিয়ার নিকট ০১৯১১-১৫৮৫১৬ ও ০১৯৯৯-১২১২২৪ নং সিম দিয়ে ১লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দিলে পাপিয়ার কন্যাকে খুন করে লাশ গুম করবে কিম্বা ভারতের পতিতালয়ে বিক্রি করে দিবে বলে হুমকি প্রদান করেন। এ ঘটনা স্বামী মাহাবুবকে জানালে সে দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করার জন্য প্রভাবিত করতে থাকে। এরপর গত ১০ নভেম্বর সকাল ১০টায় ০১৯১১-১৫৮৫১৬ নম্বর সিম দিয়ে পুনরায় ১০লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। না দিলে মেয়েকে অ্যাসিড মারার হুমকি দেয়। এ ঘটনা গত ১৫ ডিসেম্বর বেলা ৩টায় পাপিয়া চুয়াডাঙ্গা সমবায় নিউ মার্কেটের সামনে এসে স্বামী মাহাবুব মেম্বারের সাথে দেখা হয়। এ সময় মাহাবুব মেম্বারকে চাঁদা দাবির মোবাইল নাম্বারটি মোবাইল খুলে দেখাতে গেলে ০১৯১১-১৫৮৫১৬ নাম্বারে ভুলবশত চাপ পড়ে যায়। তখন স্বামী মাহাবুব মেম্বারের কাছে থাকা মোবাইলটি বেজে ওঠে এবং পাপিয়া বুঝতে পারে চাঁদাবাজি তার স্বামী মাহাবুব মেম্বর। এরপর পাপিয়া তার স্বামী মাহাবুব মেম্বারের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এ সময় মাহাবুব মেম্বার প্রকাশ্যেই ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করতে থাকে। এ ঘটনায় পাপিয়া মাহাবুব মেম্বারের বিরুদ্ধে গত ১৮ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে চাঁদাবাজির মামলা করে। গত বুধবার বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই নাজমুল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার সামনে থেকে মাহাবুব মেম্বারকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। এ ব্যাপারে এসআই নাজমুল বলেন, মাহাবুব মেম্বার থানার সামনে ঘোরাফেরা করছিলো। গোপন সংবাদের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাহাবুব মেম্বারের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।