‘মানির মান স্রষ্টাই রাখেন’ এ প্রবাদ সমাজে বহুল প্রচলিত হলেও মিথ্যা অভিযোগে বহু মানির মান যে বহুভাবেই ধুলুণ্ঠিত হয়, হচ্ছে তা বলাই বাহুল্য। সে কারণেই কোনো অভিযোগ উত্থাপন মানেই অভিযুক্তকে দোষী ভাবা অবান্তর। যদিও আমাদের সমাজের মানিদের কেউ যদি কোনো নারীর অভিযোগে অভিযুক্ত হন তা হলেই রাষ্ট্র হতে না হতেই রা রা পড়ে যায়। যেমনটি চুয়াডাঙ্গা বদরগঞ্জ জীবনার মন্টু মিয়ার ক্ষেত্রে ঘটেছে। অবশ্য শেষ পর্যন্ত তার বাড়ির গৃহপরিচারিকা চম্পার কুমারিত্ব অক্ষুণ্ন থাকার বিষয়টি ডাক্তারি পরীক্ষায় ধরাপড়ার পর সে যে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিলো তা স্বীকার করে তাকে যারা প্ররোচনা করেছিলো তাদেরও পরিচয় প্রকাশ করেছে।
সমাজে কতো রকমেরই না প্রতারক রয়েছে। ছলেবলে কৌশলে লোভের টোপ মেলে ধরে বিশ্বাস স্থাপন যেমন এক শ্রেণির প্রতারকের অস্ত্র, তেমনই কিছু প্রতারক আছে যারা হুমকি ধামকি দিয়ে কিংবা মিথ্যা অভিযোগ তুলে মামলায় জড়িয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়। এই মামলাবাজ প্রতারকচক্র খুবই ভয়ঙ্কর। এর মধ্যে কিছু আছে যারা জমির প্রকৃত মালিকদেরও নাকানি চুবানি করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর নিস্তার দেয়। কিছু আছে যাদের অস্ত্র নারী। এরা অতীব অর্থলোভী না হলে কি একজন আদর্শবান গৃহকর্তার বিরুদ্ধে তার বাড়ির দীর্ঘদিনের কিশোরী গৃহপরিচারিকাকে দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উত্থাপন করিয়ে অর্থ দাবি করে? চুয়াডাঙ্গা হায়দারপুরের মেয়ে। শিশুকাল থেকেই কুতুবপুরের বদরগঞ্জ জীবনার মন্টু মিয়ার বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে আসছিলো। এর মাঝে সে যখন গৃহকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলে, তার গৃহকর্তা ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। এ অভিযোগে মামলা রুজুর পর অভিযুক্তের সামাজিক অবস্থান কোথায় গিয়ে ঠেকেছে? তাছাড়া অভিযোগ উত্থাপনের সময় অন্তঃসত্ত্বার প্রমাণ হিসেবে যে আল্ট্রাসনো রিপোর্ট পেশ করা হয়, তাও যে ভুয়া তা ইতোমধ্যেই পরিষ্কার হয়েছে বলে পুলিশের বরাত দিয়ে গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় গুরুত্বসহকারে তুলে ধরা হয়েছে। প্রকৃত সত্য উন্মোচনে তদন্ত কর্তার বিচক্ষণতা অবশ্যই সাধুবাদের দাবি রাখে। তদন্তকর্তা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে অভিবাদন।
অবশ্যই মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপনকারীসহ তার সহযোগীদের আইনের আওতায় নিতে হবে। বানোয়াট অভিযোগে অর্থ বাগিয়ে নেয়ার জন্য যারা কিশোরীকে প্রলুব্ধ করেছে বলে প্রকাশ পেয়েছে তাদের বিষয়েও চুলচেরা তদন্ত করতে হবে। কেননা, যে বা যারা মিথ্যা বলে তারা নিজেকে বা নিজেদের রক্ষার্থে আবারও যে মিথ্যা বলছে না তা হলফ করে বলা নিশ্চয় সঙ্গত নয়। তবে প্রতারকদের কেউ কোনোভাবে পার পাক তা কাম্য নয়। গৃহকর্তার ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগের নেপথ্য উন্মোচনে বিচক্ষণ তদন্তকর্তা নিশ্চয় মিথ্যার আশ্রয় নেয়া ও মিথ্যাকে সমর্থনকারীদের আইনের আওতায় নিতে সক্ষম হবেন। এ বিশ্বাস আমাদের রয়েছে।