কুষ্টিয়া আঞ্চলিক গণিত উৎসব ॥ সাফল্যর ধারা বজায় রাখলো গাংনী গণিত পরিবার

গাংনী প্রতিনিধি: পূর্বের মতোই সাফল্যের ধারা বজায় রেখেছে মেহেরপুর গাংনী গণিত পরিবার। গতকাল শুক্রবার কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ‘ডাচবাংলা ব্যাংক, প্রথম আলো’ আঞ্চলিক গণিত উৎসবে ৯টি মেডেল অর্জন করেছে গাংনী গণিত পরিবারের সদস্যরা। কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ জেলার ৮ শতাধিক শিক্ষার্থী এ গণিত উৎসবে অংশ নেয়। প্রাইমারি ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয় গাংনী প্রি-ক্যাডেট অ্যান্ড হাইস্কুলের ফারিহা, একই ক্যাটাগরিতে ২য় রানার্সআপ হয় গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্নীল এবং লাইসিয়াম হাই স্কুলের সাকি।
জুনিয়র ক্যাটাগরিতে লাইসিয়াম হাইস্কুলের অর্ণ এবং গাংনী প্রি-ক্যাডেট অ্যান্ড হাইস্কুলের রিমু চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ১ম রানার্সআপ হয়েছে গাংনী প্রি-ক্যাডেট অ্যান্ড হাইস্কুলের অভি। সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে সন্ধানী স্কুল অ্যান্ড কলেজের আদিব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। একই ক্যাটাগরিতে সন্ধানী স্কুল অ্যান্ড কলেজের হুসাইন এবং গাংনী প্রি-ক্যাডেট অ্যান্ড হাইস্কুলের সাবিকুন নেহা ২য় রানার্সআপ হয়েছে। গাংনী গণিত পরিবারের সভাপতি বোরহান কবির খোকন এবং সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান রানা ক্লাবের এ সাফল্যের জন্য গাংনীর শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সুধী সমাজের প্রতিনিধিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান ক্লাবের সাবেক পরিচালক আল-আমিন আশিক এবং বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির ক্লাব সমন্বয়কারী ও গাংনী গণিত পরিবারের সাবেক পরিচালক আবির শাফী বিন্দু। সকালে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএস মেহেদী হাসান জাতীয় পতাকা, ডাচ-বাংলা ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার ব্যবস্থাপক দিবাকর বিট জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা এবং পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজমুল আরেফিন আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে অতিথিরা উৎসবের উদ্বোধন করেন।
উৎসবে উদ্বোধনী বক্তব্যে পুলিশ সুপার এসএম মেহেদী হাসান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। তোমরা বিজয়ের গান গাইবে, মনে ধারণ করবে। যত বেশি গণিত শিখবে, বেশি বেশি করে গণিতের চর্চা করবে, তত বেশি তোমাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে।’ উদ্বোধনের পর শুরু হয় পরীক্ষার পর্ব। এরপর বন্ধুসভার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও প্রশ্ন-উত্তর পর্ব ও সমাপনী অনুষ্ঠান হয়। দুপুরেই আঞ্চলিক উৎসবের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
সাহসী আনিকা: ২০ দিন ধরে জ্বর কমছেই না আনিকার। কখনো ১০৩, কখনো বা ১০৪। অবস্থা খারাপ হওয়ায় হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছে তাকে। তবে শারীরিক এ কষ্ট তাকে দমাতে পারেনি। হাতে ইনজেকশন দেয়ার ক্যানোলা নিয়েই সে চলে এসেছে গণিত উৎসবে। মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার প্রত্যন্ত ১৬ টাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী আনিকা খাতুন। হাসপাতালের বিছানা থেকেই কুষ্টিয়া আঞ্চলিক গণিত উৎসবে অংশ নিতে যায়। পরীক্ষা শেষে আবার সে হাসপাতালের বিছানায় চলে যায়। আনিকার মা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, বরাবরই আনিকা ভালো ছাত্রী। স্কুলে সব পরীক্ষায় ফলাফলের দিক দিয়ে শীর্ষে অবস্থান থাকে তার। বাড়ি থেকে আসার সময় আনিকা বই নিয়ে এসেছে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়ে পড়েছে। তার পড়ার প্রতি খুবই আগ্রহ। যেকোনো প্রতিযোগিতায় সে অংশ নেয়। তাকে থামানো যায় না।