কুয়াশার আড়ালে সূর্য : চুয়াডাঙ্গায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা

রাস্তার পাশের পুরোনো গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় : নতুন গরম পোশাকও দেদারছে বিক্রি

কামরুজ্জামান বেল্টু/তৌহিদ তুহিন: চুয়াডাঙ্গাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় তেমন পূর্বাভাস ছাড়াই গতকাল সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। গতরাতে কুয়াশার যে ঘণত্ব ছিলো তাতে আজও সূর্যের দেখা মিলবে কিনা তাও নিশ্চিত নয়। কনকনে শীতে এলাকার মানুষ থরথর কাপলেও নিচের তাপমাত্রা গতকালও চুয়াডাঙ্গায় কিছুটা বেড়েছে। তবে ওপরের তাপমাত্রা হ্রাস পেয়ে নিচের তাপমাত্রার কাছাকাছি নেমে এসেছে। ফলে শৈতপ্রবাহ ছাড়াই তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে চুয়াডাঙ্গায়।
শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে চুয়াডাঙ্গায় রাস্তার ধারের পুরোনো কাপড়ের স্বস্তা দোকানে ভিড় বেড়েছে। নতুন গরম পোশাকের দোকানেও বেড়েছে বেচা-বিক্রি। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো কক্সবাজারে ২৯ দশমিক ৬ আর সর্বনি¤œ তাপমাত্রা তেতুলিয়ায় ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। চুয়াডাঙ্গায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপছিলো ১৮ দশমিক শূন্য, সর্বনি¤œ ছিলো ১৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুধু চুয়াডাঙ্গাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায়ই কুয়াশাচ্ছন্ন নয়, দেশের নদী অববাহিকায় ঘণকুয়শার কারণ দৌলাতদিয়া-পাটুরিয়াসহ বেশক’টি নদীপথে নৌচলাচল বিঘিœত হয়। রাতে ফেরী স্বাভাবিকভাবে চলতে না পারার কারণে গতরাতেও দৌলাতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রীবাহি কোচ আটকে থাকে। যাত্রী সাধারণকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোয়াতে হয়।
শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর ও শহরতলীর রাস্তার পাশে পুরোনো গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় বেড়েছে। পুরোনো জেলখানার পাশের পুরোনো কাপড়ের দোকানিদের মধ্যে প্রায় সকলেই হাসিমাখা অভিন্ন অবয়ব মেলে ধরে বলেছেন, এবারের শীতে আজই বেশি বেচা-বিক্রি হয়েছে। শীতের শুরু থেকে টুকটাক বিক্রি হলেও শীতের তীব্রতা খদ্দের এইসব সস্তার দোকানে টেনে আনতে শুরু করেছে। বড়বাজার পোস্ট অফিসের সামনে, রেলবাজার আলিয়া মাদরাসার অদূরে, দৌলাতদিয়াড় বাসস্ট্যান্ড এলাকাসহ গুলশানপাড়ার মধ্যেও পুরোনো কাপড়ের দোকানে গতকাল ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। পুরোনো কাপড়ের দোকানেই শুধু নয়, নতুন গরম কাপড়ের দোকানেও বেড়েছে বিক্রি। পুরাতনগলি, সমবায় নিউ মার্কেট, প্রিন্স প্লাজাসহ গরম পোশাক বিক্রির বিপণী বিতানগুলোতে ভিড় কম ছিলো না।
এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগড়ব এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মরসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘনকুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। পাঁচ দিনের আবহাওয়ার খবরে বলা হয়েছে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথে এ উপজেলায় ঘনকুয়াশার চাঁদরে ঢেকে যাচ্ছে। এর ওপর গতকাল মঙ্গলবার ভোর হতে শুরু হয়েছে হাঁড় কাঁপানো তীব্র শীত। সকাল থেকে আকাশে সূর্যের দেখা মেলেনি। এদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির ফলে ঠা-াজনিত রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাঁচি-কাশিসহ কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। অপর দিকে শীতের কারণে সারাদিনই গরম পোশাক পরে মানুষজনকে চলাচল করতে দেখা যায়। সন্ধ্যার পর জনবহুল শহর অনেকটাই জনশূন্য হয়ে পড়ে। শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে অনেককে পুরোনো কাপড়ের দোকানে ভিড় করতে দেখা গেছে। তবে তীব্র এ শীতের মধ্যে অসহায় হয়ে পড়েছে গরিব ও হতদরিদ্র ছিন্নমূল মানুষ।