মৃত্যুর আগেই শয়নকক্ষে স্বামী-স্ত্রীর কবর নির্মাণ

দামুড়হুদার আরামডাঙ্গায় কবিরাজের কা- : দেখতে কৌতূহলী নারী-পুরুষের ভিড়

মোস্তাফিজ কচি: জীবদ্দশায় ঘরের মেঝে খুঁড়ে জোড়াকবর নির্মাণ করেছেন নজরুল ফকির। কবরের পাশেই বিছানা পেতে শুয়ে থাকছে ওই দম্পতি। এ নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই এলাকাবাসীর। চাঞ্চল্যের কারণে এলাকার নারী-পুরুষেরা ভিড় জমাচ্ছে ওই জোড়া কবর দেখতে। দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের আরামডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
আরামডাঙ্গা মাঝপাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে নজরুল ফকির এলাকায় কবিরাজ হিসেবে অধিক পরিচিত। লোকমুখে শোনা যায়, নজরুল ফকির প্রচার করছেন আগামী ২৪ ডিসেম্বর তাদের মৃত্যু হবে। তাই তারা শয়নকক্ষে আগেভাগেই স্বামী-স্ত্রীর কবর নির্মাণ করেছেন। বিষয়টি শোনার পর সাংবাদিক হিসেবে ছুটে যাওয়া হয় নজরুল ফকিরের (৬৫) বাড়িতে। তবে আগামী ২৪ ডিসেম্বর মৃত্যুর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, মৃত্যুর দিনক্ষণ নির্ধারণের খবরটি সঠিক নয়। ওটা আমি বলিনি। নজরুলের বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শয়ণকক্ষে লোহার রড়, খোয়া, বালি ও সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দিয়ে পাশাপাশি দুটি কবর নির্মাণ করা হয়েছে। বিষয় নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কৌতূহলী শ’শ’ নারী-পুরুষ ওই কবর দেখতে নজরুলের বাড়িতে আসছে। নজরুল ফকির দীর্ঘ ২৮-২৯ বছর ধরে কবিরাজ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। কবিরাজ নজরুল ফকিরের সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি এবং তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম এনায়েতপুরী তরিকাপন্থি। স্বামী-স্ত্রী উভয় শাদা কাপড় ও হাতে দুই কেজি লোহার বালা পরে চলাফেরা করেন। এলাকায় যেখানেই সাধু সংঘ অনুষ্ঠিত হয় সেখানেই তারা একসাথে যাতায়াত করেন। নজরুল ফকির জানান তরিকা গ্রহণের পর স্ত্রীকে ফেলে বাইরে কোথাও রাত কাটান না তিনি। শয়ণকক্ষের কক্ষে কবর কেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরকালে যাতে সুখে-শান্তিতে একসাথে থাকতে পারি সেজন্যেই ঘরের মধ্যে আমরা পাশাপাশি দুজনের কবর নির্মাণ করছি। এ বিষয়ে আমার ৪ ছেলে, ৪ মেয়ে ও ভাইদেরকে বলে রেখেছি। যেখানেই মৃত্যু হোক না কেন আমাদের যেন ঘরের এ জোড়া কবরেই দাফন করা হয়। বর্তমানে শয়ণকক্ষে কবরের পাশেই কোনো রকমে থাকছি। এদিকে এ ঘটনায় ধর্মপ্রাণ অনেক মুসলমান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, এটা সম্পূর্ণ ইসলাম পরিপন্থি ব্যাপার। নজরুল ফকিরের এই কর্মকা-ে এলাকার মানুষ বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, এর পেছনে নজরুল ফকিরের অন্য কোনো মতলব আছে। কবিরাজির প্রসার বাড়ানোর মতলবেই ঘরের মধ্যে কবর খুঁড়ে এলাকাবাসীকে আকৃষ্ট করার পাঁয়তারা বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন।