ঝিনাইদহে অফিস ফাঁকি দিয়ে ডাক্তারের ক্লিনিক বাণিজ্য

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. প্রবির কুমার মণ্ডল ঠিক মতো অফিস করেন না। প্রসূতি মায়েরা তাকে না পেয়ে প্রতিনিয়ত ফিরে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রসূতি মায়েদের অজ্ঞতার ওপর ট্রেনিং নিয়ে ডা. প্রবির যাবতীয় সব অপারেশন করে যাচ্ছেন। ফলে তার হাতে এ পর্যন্ত তিনজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ২০০৫ সাল থেকে ডা. প্রবির কুমার মণ্ডল ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে কর্মরত। সরকারি নির্দেশ মোতাবেক ২৪ ঘণ্টা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে তার অবস্থান করার কথা। এ জন্য তার রয়েছে আবাসিক সুবিধা। কিন্তু তিনি ঝিনাইদহ শহরের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মধ্যে বসবাস না করে থাকেন কালীগঞ্জ শহরে। সেখান থেকেই তিনি যাতায়াত করেন। ফলে সিজারিয়ান রোগীরা তাকে না পেয়ে প্রায় সময় ফেরত যায়।
এ জন্য ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে প্রসূতি সিজারের চিত্র হতাশাজনক। চলতি বছরের ১১মাসে মাত্র ৭ জনকে সিজার করা হয়েছে। গোবিন্দপুর গ্রামের আসমা খাতুন নামে এক প্রসূতি অভিযোগ করে বলেন, ডা. প্রবির ম-লকে অফিসে এসে পায়নি। কদাচিৎ যদিও তিনি আসেন তবে দুপুর হলেই তিনি চলে যান।
গতকাল মঙ্গলবার অফিসে গিয়েও ডা. প্রবিরকে পায়নি। তবে অফিস প্রধান ডা. তাঞ্জুয়ারা তাসলীম জানান, তিনি সাগান্না গেছেন ক্যাম্প করতে। তবে প্রতিদিনই তার ক্যাম্প আছে এমন অজুহাত তুলে ক্লিনিকে যাচ্ছেন অজ্ঞান করতে।
চিকিৎসকদের একটি সূত্র জানায় ডা. প্রবির কুমারের ভুল চিকিৎসায় তিনজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ হরিণাকুণ্ডুর মোকিমপুর গ্রামের আব্দুল মোতালেব লস্কারের মৃত্যু হয়েছে। তার ছেলে মাসুম রানা অভিযোগ করে বলেন, তার বাবাকে যথাযথভাবে অজ্ঞান না করার কারণে সুস্থ মানুষটি তারা মেরে ফেলেছে। অভিযোগ উঠেছে দুরবর্তী রোগীকে ভাসেকটমি ও লাইগেশন করতে ফ্রি কল্যাণ কেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। ব্যবহার না করলে তিনি পাবেন ২৩’শ টাকা। কিন্তু তিনি সরকারি অ্যাম্বুলেন্সও ব্যবহার করেন আবার ২৩’শ টাকাও তুলে নেন। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. জাহিদ আহমেদ বলেন, আমি কর্মস্থলে থাকার জন্য ডা. প্রবির কুমার ম-লকে মৌখিক ও লিখিতভাবে বারবার তাগাদা দেয়ার পরও অদ্যবধি তিনি কর্মস্থলে থাকছেন না। তিনি বলেন, ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মধ্যে থাকার জন্য আবাসিক সুবিধা রয়েছে।