মিসরে মসজিদে বোমা গুলি : নিহত ২৩৫

জুমার নামাজের সময় হামলা : আহত শতাধিক

মাথাভাঙ্গা মনিটর: মিসরের একটি মসজিদে বোমা ও বন্দুক হামলায় অন্তত ২৩৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১২০ জনের বেশি। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের সময় সিনাই উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় একটি মসজিদে এই হামলার ঘটনা ঘটে। তাত্ক্ষনিকভাবে হামলার দায়িত্ব কেউ স্বীকার করেনি। তবে আইএস হামলা চালাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আল আরিশের বির আল-আবেদ শহরের কাছে আল রাওদা মসজিদে হামলা চালায় জঙ্গিরা। পুলিশ জানিয়েছে, চারটি গাড়িতে করে বন্দুকধারীরা মসজিদে এসে পৌছায়। ওই সময় মুসল্লিরা প্রার্থনায় রত ছিলেন। তারা এসেই চারপাশে বোমা হামলা চালায়। এরপর বন্দুক দিয়ে গুলি শুরু করে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বোমা হামলার পর মুসল্লিরা যখন মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলেন তখন বন্দুকধারীরা গুলি করছিলো। এমনকি অ্যাম্বুলেন্সেও গুলি চালায় বন্দুকধারীরা। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আসা ছবিতে দেখা গেছে, মসজিদের ভেতর রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জঙ্গিদের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিলো নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। ওই মসজিদটিতে জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কিছু সদস্য। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি গতকাল হামলার পর নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন। বৈঠকে হামলার জবাব কিভাবে দেয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০১৩ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার মিসরে জঙ্গি হামলা বাড়ছে। ২০১৪ সালে সিনাই উপত্যকায় আইএসসহ বিভিন্ন জঙ্গিদের উত্থান ঘটে। ওই বছর আত্মঘাতী হামলায় ৩১ সেনা নিহত হয়। পরে সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রেসিডেন্ট সিসি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নামাজ প্রায় শেষের দিকে। এমন সময় মসজিদের চারপাশে বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, দুর্গম পথে চলতে সক্ষম এমন চারটি যানে করে জঙ্গিরা আসে। মসজিদের প্রবেশ পথ আটকে দিতে তারা বাইরের যানবাহনেও আগুন ধরিয়ে দেয়। ৪০ জঙ্গি চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে হামলা চালায়। বোমা হামলার পর জঙ্গিরা মসজিদের ভেতরে গিয়ে গুলি চালায়।

স্থানীয়রা জানান, মসজিদে সুফিবাদীরা নামাজ পড়তেন। আইএস সুফিবাদের বিরুদ্ধে। হতাহতদের মধ্যে সামরিক বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। হামলার ঘটনায় দেশটিতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট সিনি প্রতিশোধ নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। গতকালই ওই শহরে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বিমান হামলা চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেসহ বিশ্ব নেতারা হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।