চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের ধাক্কায় নিহত ভ্যানচালকের পরিচয় মিলেছে : মোমিনপুরের আশির উদ্দীন

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার উত্তরা ফিলিং স্টেশনের সামনে চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের ধাক্কায় সড়কে ছিটকে পড়ে নিহত দরিদ্র ভ্যানচালকের পরিচয় মিলেছে। নিহত ভ্যানচালক চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের একমাত্র ছেলে দরিদ্র ভ্যানচালক আশির উদ্দীন। ফেসবুক থেকে এ দুঃসংবাদ জেনে নিহতের স্ত্রী গতকাল আলমডাঙ্গা থানায় উপস্থিত হয়ে লাশ শনাক্ত করেছেন।
জানা গেছে, গতপরশু বুধবার রাত সোয়া ৮টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাস চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স (রেজিস্ট্রেশন নং ঢাকা মেট্রো-ব-১৪৪২৮৯) আলমডাঙ্গার উত্তরা ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছুলে পেছন দিক থেকে একটি ভ্যানকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে সড়কের ওপর ছিটকে পড়ে ভ্যানচালক। সংবাদ পেয়ে ওই রোডে টহলরত পুলিশের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভ্যানচালককে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে আলমডাঙ্গার পপুলার মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেফার করে। সে সময় আলমডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা আওলিয়ার রহমান মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওই রাতে নিহতের পরিচয় কেউ বলতে পারেনি। পরদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিহতের স্ত্রী মুক্তি খাতুন মা আলেয়া খাতুন ও গ্রামের মেম্বার নিপূণ লাশ শনাক্ত করেন। তারা দাবি করেন নিহত ব্যক্তি হচ্ছেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর গ্রামের মৃত আমজাদ আলীর একমাত্র ছেলে আশির উদ্দীন।
গতকাল ময়নাতদন্ত শেষে দুপুর পর লাশ নিহতের বাড়ি পৌঁছে। জানাযা শেষে বাদ এশা গ্রামের গোরস্তানে লাশ দাফন করা হয়েছে।
গ্রাম সূত্রে জানা যায়, মৃত আমজাদ আলীর এক ছেলে ও এক মেয়ে। নিহত আশির উদ্দীন ছিলেন একমাত্র ছেলে। আশির উদ্দীনের ৬ বছরের একটা কন্যাসন্তান রয়েছে। দরিদ্র ভ্যানচালক আশির উদ্দীন ছিলেন অত্যন্ত কর্মঠ। কাজ পাগল আশির উদ্দীন ওই দিন সকালে ভ্যান নিয়ে ভাড়া মারতে বের হয়েছিলেন। আর ফেরা হয়নি।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ খান বলেন, চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সই ওই ভ্যানচালককে যে চাপা দিয়েছে সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ও অকাট্য প্রমাণ পুলিশের হাতে রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়েছে।
এদিকে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার জানিয়েছেন, লাশ ময়নাতদন্তের সময় চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের পক্ষ থেকে কয়েকজন প্রতিনিধি গিয়েছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। তারা নিহতের স্বজনদের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিষয়টি মীমাংসা করে নেয়ার জন্য। স্বজনদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো আগে লাশ দাফন হোক। তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছে যে আজ শুক্রবার আলমডাঙ্গা থানায় উপস্থিত হয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হবে।

Leave a comment