চুয়াডাঙ্গায় মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ১৩ পরিবার ও আহত ১৩ পরিবারের মাঝে চেক বিতরণ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুরে গত ২৬ মার্চ মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ১৩ ও আহত ১৩ পরিবারের মাঝে চেক বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিভাবে খুলনা বিভাগীয় অতিরিক্ত কমিশনার সুবাস চন্দ্র সাহা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ক্ষতিগ্রস্থ ২৬ পরিবারের মাঝে ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন।
জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পরিষদের সদস্য প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান টিপু তরফদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুর রাজ্জাক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। দূর্ঘটনায় আহত গাজীউর রহমান ও মজিবর রহমান স্মৃতিচারণ করেন। অনুষ্ঠানে দামুড়হুদা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আশরাফ হোসেন, পিআইও অফিসের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান, পারকৃঞ্চপুর-মদনা ইউনিয়নের সংরক্ষিত সদস্য (৩-৫নং ওয়ার্ড) নাসরিন সুলতানা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য হযরত আলী উপস্থিত ছিলেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং ঢাকার সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের সহযোগিতায় সড়ক দূর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ নিহত ১৩ পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে এবং আহত ১৩ পরিবারকে ৪০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। নিহত ১৩ জন হলেন, দামুড়হুদার বড়বলদিয়া গ্রামের ইজ্জত আলী, আব্দার রহমান, বিল্লাল হোসেন, আকুবার আলী, নাজির হোসেন, শান্ত হক, হাফিজুল ইসলাম, সুলতানপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম, বলদিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম, বিল্লাহ হোসেন, লাল চাঁদ আলী, জজ মিয়া ও শাহিন আলী। আহত ১৩ জন হলেন, বড়বলদিয়া গ্রামের তরিকুল ইসলাম, আতিকুল হক, জিয়াউর রহমান, মজিবর রহমান, সুরাবুদ্দীন, আলতাফ হোসেন, নুর ইসলাম, গাজীউর রহমান, শফিকুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, সুমন আলী, লাল চাঁদ ও আলী হোসেন। চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সুবাস চন্দ্র সাহা বলেন, নিজের জীবনের চেয়ে সময়ের দাম বেশি নয়। ভাগ্য হয়তো তাদের নিয়ে গেছে। সড়ক দূর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোতে যে অসামান্য ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। সাউথ বাংলা ব্যাংক এসব পরিবারের জন্য পাশে এসে দাঁড়িয়েছে তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এ টাকা দিয়ে আয়বর্ধক কাজ করে পরিবারের উন্নতির জন্য আপনারা সচেষ্ট থাকবেন।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেন, সকলের সহযোগিতায় রাস্তার দুপাশে ঝোড় জঙ্গল পরিস্কার করা হয়েছে। ইজিবাইক লিমিট করার জন্য শহরের ইজিবাইক শুধুমাত্র শহরের মধ্যে চলবে। পৌরসভার মধ্যে ইজিবাইকের রেজিস্ট্রেশন ইস্যু করা হবে। আলমসাধু কারখানা বন্ধ করা হচ্ছে। আলমসাধু না চলে, যাত্রী না উঠে। চলাচল নিয়ন্ত্রন করছি। স্যালোইঞ্জিনের মেশিন খুলে বন্ধ করছি। শহরে টাউন সার্ভিস হিউম্যান হলার আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে চালু করা হচ্ছে। বাসটার্মিনাল থেকে শহীদ হাসান চত্বর ৫ টাকা ভাড়া এবং ভেমরুল্লাহ পর্যন্ত ১০ টাকা ভাড়া ঠিক করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত : গত ২৬ মার্চ দামুড়হুদার জয়রামপুরে মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ১৩ এবং আহত ১২ পরিবারের মাঝে ১০ হাজার টাকা করে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা সরকারের পক্ষ থেকে বিতরণ করা হয়। এ তালিকায় একজন আহত যোগ হয়। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার এমপি, জেলা আওয়ামী সহ-সভাপতি চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর, কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক হাশেম রেজাসহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়ে অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। ফলে, ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিটি পরিবার এ যাবত ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুদানের টাকা পেয়েছেন।

Leave a comment