সারাদেশে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা শুরু
স্টাফ রিপোর্টার: গতকাল রোববার থেকে শুরু হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা। পরীক্ষার প্রথম দিনেই অনুপস্থিত ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩শ ৮৩ পরীক্ষার্থী। এরমধ্যে পিইসি পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলো ১ লাখ ৬ হাজার ৪শ ৭১ এবং ইবতেদায়ীতে অনুপস্থিত ছিলো ৩৮ হাজার ৯শ ১২ পরীক্ষার্থী। তবে গতকাল অনুষ্ঠিত ইংরেজি পরীক্ষায় কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়নি। আজ উভয়েরই বাংলা বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পিইসি পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে অনুপস্থিত ছিলো ৪০ হাজার ৪শ ৪৬ জন। এরপর চট্টগ্রাম বোর্ডে অনুপস্থিত ছিলো ২০ হাজার ৬শ ৫৫ জন পরীক্ষার্থী। ইবতেদায়ীতেও সবচেয়ে বেশি ঢাকা বোর্ডে ৯ হাজার ৮শ ৮২ জন এবং চট্টগ্রাম বোর্ডে ৯ হাজার ৩শ ৫৬ জন অনুপস্থিত ছিলো। উভয় পরীক্ষায় গতকাল ৩০ লাখ ৯৬ হাজার ৭৫ ক্ষুদে পরীক্ষার্থীর অংশ নেয়ার কথা ছিলো।
চুয়াডাঙ্গায় প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রথমদিনে ইংরেজি পরীক্ষায় মোট ৪শ ৮৪ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মোট ২০ হাজার ৯শ ৩৩ জন শিক্ষার্থী। আজ সোমবার বাংলা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার চার উপজেলার ৮৬টি পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট ২১ হাজার ৪শ ১৮ জন শিক্ষার্থী প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিলো। কিন্তু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মোট ২০ হাজার ৯শ ৩৩ জন শিক্ষার্থী। প্রাথমিকে ১৯ হাজার ৫শ ৩৭ জন এবং ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ১ হাজার ৩শ ৯৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। প্রাথমিকে উপস্থিতির হার ৯৮ দশমিক ৬৩ ভাগ এবং ইবতেদায়ী পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ৮৬ দশমিক ৭৬ ভাগ। পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলো প্রাথমিকে ২৭১ জন শিক্ষার্থী এবং ইবতেদায়ীতে ২১৩ জন শিক্ষার্থী। জেলার ৫৫টি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় আলমডাঙ্গায় ৭৫ জন, দামুড়হুদায় ৩৬ জন, জীবননগরে ৫৮ জন এবং সদর উপজেলায় ১০২ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। এর মধ্যে প্রাথমিকে ছেলে ১৫৩ জন এবং মেয়ে ১১৮ জন অনুপস্থিত ছিলো। জেলার ৩১টি ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় আলমডাঙ্গায় ৬৯ জন, দামুড়হুদায় ৬৯ জন, জীবননগরে ২৪ জন এবং সদর উপজেলায় ৫১ জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। এর মধ্যে ইবতেদায়ী পরীক্ষায় ছেলে ১২২ জন এবং মেয়ে ৯১ জন অনুপস্থিত ছিলো।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, প্রথমদিনের পরীক্ষা ভালোই হয়েছে। ইংরেজী পরীক্ষায় ৪৮৪ জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, গতকাল রোববার প্রথমদিনে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় মেহেরপুর জেলার মোট ৩৪টি কেন্দ্রে ১২ হাজার ৩৬৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২ হাজার ১৬৫ জন পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিলো। জেলায় অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০৩ জন। প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত ইংরেজি পরীক্ষায় কোনো পরীক্ষার্থী ও কোনো পরীক্ষক বহিষ্কার হয়নি। মেহেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জেছের আলী জানান, প্রথম দিনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ইংরেজি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। কোনো পরীক্ষার্থী ও কোনো পরীক্ষক বহিষ্কার হয়নি। তিনি আরো জানান, মেহেরপুরে সদর উপজেলায় মোট ১২টি কেন্দ্রে মোট ৪ হাজার ৮৬০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪ হাজার ৭৫৬ জন পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিলো। অনুপস্থিত ছিলো ১০৪ জন। গাংনী উপজেলায় মোট ১৭টি কেন্দ্রে মোট ৫ হাজার ৫৮৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫ হাজার ৫০৪ জন পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিলো। অনুপস্থিত ছিল ৭৯ জন। মুজিবনগর উপজেলায় মোট ৫টি কেন্দ্রে মোট ১ হাজার ৯২৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে এক হাজার ৯০৫ জন পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিলো। অনুপস্থিত ছিলো ২০ জন। জেলায় মোট অনুপস্থিত ২০৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ১৩৭ জন এবং ছাত্রী ৬৬ জন রয়েছেন।
একদিকে জেলার গাংনী উপজেলায় সর্বমোট ২৩ জন ইংরেজি ভার্সন পরীক্ষার্থীর সকলেই পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে।
অপর দিকে ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় জেলার মোট ১৩টি কেন্দ্রে ৬৩১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২টি কেন্দ্রে ১৩০ জন, গাংনী উপজেলায় ৭টি কেন্দ্রে ৩০০ জন এবং মুজিবনগর উপজেলায় ৪টি কেন্দ্রে ৫৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। পরীক্ষা চলাকালে জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জেছের আলী জেলার বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রথমদিনের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। প্রথমদিনে জেলার ৬টি উপজেলায় ৮২৯ জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দেয়া তথ্য মতে, সারাদেশের ন্যায় ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলায় ১৬৭টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ৩৩ হাজার ৭০৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে অনুপস্থিত ছিলো ৪৩৯ জন। এদের মধ্যে কালীগঞ্জ থানায় ৬১ জন, কোটচাঁদপুরে ৩৩, ঝিনাইদহ সদরে ১৩৮, মহেশপুরে ৩১, শৈলকুপায় ১১১ এবং হরিণাকু-ুতে ৬৫ জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। এছাড়াও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনীতে অনুপস্থিত ছিলো ৩৯০ জন। এদের মধ্যে কালীগঞ্জ থানায় ৫৯ জন, কোর্টচাঁদপুরে ১৮, ঝিনাইদহ সদরে ১২১, মহেশপুরে ৮০, শৈলকুপায় ৬২ এবং হরিণাকুণ্ডুতে ৫০ জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান জানান, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা শেষ করতে প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত ছিলো। পরীক্ষা চলাকালে জেলার বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন।