ঝিনাইদহের রফিকুলের মৃত্যু, কোথায় যাবে যমজ রুমুু-ঝুমু?

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: মেধাবী দুই মেয়েকে জজ বানানোর আশায় বেঁচে থাকার আকুতি ছিলো রফিকুলের, কিন্তু চিকিৎসার সামর্থ ছিলো না। এ নিয়ে ফেসবুক, নিউজ পোর্টাল ও পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হলে ছয় লাখ টাকা পেয়েছিলো পরিবারটি। কিন্তু তা দিয়ে রফিকুলের নষ্ট হওয়া কিডনি বদল হয়নি। এ টাকা দিয়ে দীর্ঘ দশ মাস ঢাকায় থাকা আর চলেছে ডায়ালেসিস। অবশেষে গতকাল মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজারগোপালপুর গ্রামের মৃত আদিল উদ্দীন মালিথার ছেলে রফিকুল ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। দুই মাস আগে রফিকুল যখন ঝিনাইদহ থেকে ঢাকায় যান তখন তিনি প্রতিবেশিদের বলেছিলেন আপনারা মেয়ে দুইটি দেখে রাখবেন। হ্যা তিনি তার যমজ মেয়ে রুমু আর ঝুমুর কথাই বলেছিলেন। তার কথাটি এতো দ্রুত সত্য হবে তা বিশ্বাস হয়নি। স্ত্রী রওশন আরা ও কলেজ পড়–য়া যমজ দুই মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে মৃত্যু পথযাত্রী রফিকুল ইসলামের বরাবরই দুশ্চিন্তা ছিলো।
তার অবর্তমানে মেয়ে দুইটি পড়ালেখা করতে পারবে, না বন্ধ হয়ে যাবে এ কথা বারবার বলতেন। ৫০ বছর বয়সী রফিকুলের দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে যায়। সামান্য বেতনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষক ছিলেন রফিকুল। চাকরিই ছিলো তার একমাত্র ভরসা। এ চাকরির টাকা দিয়ে তিনি ঝিনাইদহ শহরে বাসা ভাড়া করে দুই মেয়েকে লেখাপড়া করাতেন। রফিকুলের মৃত্যুর পর স্ত্রী রওশন আরা এবং দুই মেয়ে কোথায় আশ্রয় পাবেন? কারণ তাদের তো গ্রামে কোনো জায়গা জমি নেই। নেই ব্যাংকে কোনো জমানো টাকা। কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি কি অন্তত মেয়ে দুইটির পড়ালেখার দায়িত্ব নিতে পারেন না? পরিশেষে রফিকুলের আর্থিক সহায়তার জন্য সরকারি পদস্থ কর্মকর্তা, দেশি-বিদেশী, বাংলাদেশী ভাইদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তার অসহায় পরিবার। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রফিকুলকে তার নিজ গ্রামের পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়।