গিয়াস উদ্দীন সেতু: ঝিনাইদহের বিভিন্ন হাটবাজারে অবাধে বিক্রয় হচ্ছে শীতের অতিথি পাখি। আইন থাকলেও আইনের প্রয়োগ হচ্ছে না বলে মনে করছেন সচেতন মহল। জেলার বিভিন্ন বিল, হাওড়, বাওড়ে এখন অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। আর এ সুযোগে এক শ্রেণির সৌখিন ও পেশাদার পাখি শিকারিরা বন্দুক, বিষটেপ, জালসহ বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ পেতে এসব পাখি নিধন করছেন। এতে করে একদিকে জীববৈচিত্র ধ্বংস হচ্ছে। অন্যদিকে ফসলের জমিতে ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ বাড়ছে। এখনই এর প্রতিকার করা দরকার বলে মনে করছেন সচেতন মহল। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নের বংকিরা, রাঙ্গিয়াপোতা, আসাননগর বিলে হাজার হাজার পাখি এসেছে। শীতের শুরুতেই বিলের পানি কমতে শুরু করেছে আর এ সময় অল্প পানিতে খাবার সংগ্রহের জন্য অনেক দেশি-বিদেশি অতিথি পাখি আসে আমাদের দেশের বিভিন্ন বিলে। হরিনাকু-, শৈলকুপা, মহেশপুর, কোটচাঁদপুর, কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন বিলে এখন ঝাকে ঝাকে অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। গতকাল ডাকবাংলা বাজারে পাখি বিক্রয় হচ্ছে এমন সংবাদের সূত্র ধরে বাজারে গিয়ে দেখা গেছে পাখি বিক্রয় হচ্ছে, হরিনাকু- উপজেলার একজনকে পাওয়া গেলো আর বাকীরা ততক্ষণে ৮০/৯০ বিভিন্ন জাতের পাখি বিক্রয় করে চলে গেছেন। শুধু পাওয়া গেলো দৌলতপুর ইউনিয়নের জহিরুল ইসলামকে। তিনি জানান এ পাখি রাতে বিল থেকে জাল দিয়ে ধরেছি। জহুরুল কাইয়ুম পাখি এনেছিলো ৯টি আর কাদা খোচা ১২টি। কাইয়ুম পাখির দাম ৩০০/ ৩৫০ টাকায় বিক্রয় করেছে। তিনি জানান, এই পাখি ধরে তাদের সংসার চলে। অনুসন্ধানে জানা গেছে নাথকু-ুু, রাঙ্গিয়াপোতা, বংকিরা আসননগর, গবরাপাড়া, বাদপুকুরসহ এখন বিলে প্রচুর পাখি এসেছে। আর এই পাখি শিকার করতে মানুষ রাতে জাল পেতে রেখে শিকার করছেন। খুব ভোরে উঠে পাখিগুলো জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করেন।
সাধুহাটির বাসিন্ধা কুতুব উদ্দীন জানান, শীতের শুরুতেই বিলে পাখি নেমেছে। কিন্তু এক শ্রেণির মানুষ নানান উপায়ে পাখি শিকার করছে। এদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি কেউ যেনো পাখি শিকার না করে সেদিকে কর্তৃপক্ষের মনিটরিং করা উচিত। সাধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজি নাজীর উদ্দীন জানান, পাখি নিধন কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়, আমি একদিন একটা ছেলেকে পাখি শিকার করতে দেখে তাকে বকাঝকা করে তাড়িয়েছি। আমার ইউনিয়নে কেউ যদি এমন অন্যায় করে তাকে শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থা করবো। আর প্রশাসনকে অনুরোধ করবো হাট বাজারে কেউ পাখি বিক্রয় করতে আসলে তাকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বিচার করার আহ্বান করছি।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. খান মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, পাখি নিধন করা যাবে না কারণ পাখি কৃষকের বন্ধু, এরা কৃষকের জমির বিভিন্ন ক্ষতিকারক পোকা খেয়ে পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা করে। কৃষি বিভাগ কৃষকের কীটনাশক ব্যবহার কমাতে ও পাখিরা ধানের জমিতে অবাধভাবে বিচরণ করতে পারে সেই পরামর্শ দিচ্ছে, যাতে পাখি সংরক্ষণ হয়।
শীতের শুরুতেই আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখি : ব্যস্ত শিকারীরা ঝিনাইদহের হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে পাখি দেখার কেউ নেই
