ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজীম আনার অভিযোগ করে বলেছেন, নির্বাচন আসলেই বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আব্দুল মান্নান। বিগত সময় আমাকেসহ দলীয় অনেক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছিলো। সম্প্রতি সময়ে সভাপতি আব্দুল মান্নান তাকে জড়িয়ে পত্রপত্রিকায় মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত বক্তব্য দিয়ে তার সম্মানহানী করেছেন।
তিনি এসব ঘটনার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সাবেক এমপি আব্দুল মান্নান নিয়মবর্হিভূতভাবে মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রি কলেজে শিক্ষক নিয়োগ দেয়াসহ নানা দুর্নীতি ও অনিয়ম করেছেন। তিনিসহ দলীয় নেতাকর্মীরা হামলা মামলার শিকার হয়েছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে পত্রিকায় তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন সে প্রসঙ্গে এমপি আনার বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে হলে জেলা কমিটির অনুমোদন লাগে। আমরা একটি কমিটি করে জেলা কমিটিকে দিয়েছি কিন্তু জেলা কমিটি এখনো তা অনুমোদন দেননি। সভাপতি আব্দুল মান্নান টিআর, কাবিখা, কাবিটা, জিআর প্রকল্প নিয়ে পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহির্প্রকাশ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা আনন্দ মোহন ঘোষ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি ওই নেতার মৃত্যু নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা করছেন। আ’লীগ কর্মী মিঠুনকে হত্যা করে সেই মামলায় আমাকে ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিকীকে আসামি করার অপচেষ্টা করেন।
গত মঙ্গলবার বিকেলে সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ হাইস্কুল রোডস্থ আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়ে তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি সময়ে তাকে দলীয় নেতাকর্মীরা হত্যার ষড়যন্ত্র করেছে। ষড়যন্ত্রকারীদের অনেকে গ্রেফতারও হয়েছে। কিন্তু পুলিশ হত্যার নেপথ্যে জড়িত ব্যক্তিদের কাছে এখনো পৌঁছায়নি। এ সময় তিনি তার কয়েক বছরের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে বলেন, আপনারা (সাংবাদিকরা) সত্য ঘটনা গুলি পত্রপত্রিকায় তুলে ধরেন। সত্য ঘটনা বা সৎ সাংবাদিকতা করেন আমি আপনাদের পাশে আছি এবং থাকবো।
তবে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আব্দুল মান্নান বলেন, এখানে মতামতের কোনো বিষয় নেই। কালীগঞ্জবাসী সবকিছুই জানে। আমার ব্যক্তিগত কোনো কথা নেই। এমপি আনারকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিলো। তারা আপনার পক্ষের লোকজন এমন প্রশ্নের ব্যাপারে তিনি বলেন, এসব আইনের কথা, আমি কিছু বলবো না। আইনের নিজ গতিতে সেটা চলবে। আমিও যদি ষড়যন্ত্র করে থাকি তাহলেও আইন তার নিজ গতিতে থাকবে।
মতবিনিময়ের সময় কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব মকছেদ আলী বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক তোরাব আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর আশরাফুল আলম আশরাফ, যশোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ, কালীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ সভাপতি রেজাউল করিম রেজা, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল, যুবলীগ সহ-সভাপতি শিবলী নোমানী, আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা পরিষদের সদস্য মোদাচ্ছের আলী, উপজেলা ছাত্র লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আনিচুর রহমান মিঠু মালিথা, কৃষকলীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, যুবলীগের পৌর আহ্বায়ক শফিকুজ্জামান রাসেল, যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেনসহ ঝিনাইদহ ও কালীগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলের অর্ধশতাধিক সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।