দুর্নীতি রুখতে পারলে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হতে বাধ্য

দুর্নীতি অনিয়ম রুখতে যতোটা আনুষ্ঠানিকতা দরকার, তার চেয়ে অনেকে বেশি বেশি করে দরকার দায়িত্বশীলদের স্বচ্ছ জবাবদিহিতা। মাঠপর্যায়ে শীর্ষ কর্তারা একটু আন্তরিক হলে এই জবাবদিহিতা যে রাতারাতি বাস্তবায়ন সম্ভব তা গতপরশু ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক হাতেকলমে প্রমাণ করেছেন। তিনি শৈলকুপা উপজেলা পরিষদে আকস্মিক হাজির হয়ে দেখেন ৮ কর্মকর্তা গরহাজির। সাথে সাথে জেলা প্রশাসক লিখিতভাবে জবাব চেয়েছেন। প্রথমদফা জবাবে পার পাওয়ার মতো কিছু অজুহাত দাঁড় করানো হলেও পুনর্বার একই প্রশ্নের মুুখোমুখি হলে? জেলা প্রশাসকের আকস্মিক পরিদর্শন কিছুটা হলেও যে অনিয়মের প্রতিকার মিলবে তা বলাই বাহুল্য।
দুর্নীতি অনিয়ম উন্নয়নের অন্তরায়। এটা যেমন অস্বীকার করার সুযোগ নেই, তেমনই অধিনস্থদের চেয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পদস্থদের প্রশ্রয়েই দুর্নীতি অনিয়ম পেয়ে বসে। একজন অন্যায় করে পার পেলে সমাজে তা সংক্রমিত হতে বাধ্য। আমাদের সমাজে অনিয়ম দুর্নীতি একদিনে ব্যাপকতা পায়নি। কালক্রমে পদস্থ কর্তাদের উদাসীনতা বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে অন্যায় অনিয়মের সাথে পদস্থের আপস সমাজের সর্বনাশ ত্বরান্বিত করেছে। একসময় ঘুষ বা উপঢৌকন গ্রহণে কিছুটা রাগঢাক থাকলেও সময়ের ¯্রােতে তা কিছু দফতরে বকশিশের নামে হরহামেশায় লেনদেন হয়, হচ্ছে। আর কর্মস্থলে যথাসময়ে উপস্থিত হয়ে দায়িত্বের প্রতি আনুগত্য? তাতেও চিড় ধরেছে বহু আগে। অবশ্য তথ্য অধিকার আইন এই চিড়ে এবং বহুক্ষেত্রে চরম অনিয়ম দুর্নীতি রোধে সহায়ক হয়েছে।
না, অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ করা অসম্ভব নয়। শিকড় উৎপাটন সময় সাপেক্ষ হলেও নিয়ন্ত্রণ রাতারাতিই সম্ভব। এ জন্য দরকার পদস্থ কর্তাদের বেশি বেশি দায়িত্ব পালন তথা নিজ নিজ ক্ষেত্রে কর্তব্যপরায়ণতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মেয়াদে দেশের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বৃদ্ধির সময় বলেছিলেন, বেতন বাড়ানো হলো, দুর্নীতি বন্ধ করুন। ঘুষখোর ও কর্তব্য কাজে ফাঁকিবাজদের শনাক্ত করে বাড়ি পাঠানো হবে বলেও সতর্ক করেন সকলকে। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ও সাবধানবাণী বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হতে বাধ্য। এটা নিশ্চিত করতে সরকারি দফতরসমূহের সকল কর্মকর্তার স্বচ্ছ জবাবদিহিতাই যথেষ্ট।