চুয়াডাঙ্গার ৪ উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একজন

স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত: সংশ্লিষ্ট দফতরে কাজ করতে আসা মানুষের চরম ভোগান্তি
নজরুল ইসলাম: চুয়াডাঙ্গায় উপজেলা পর্যায়ে যে সমস্ত উন্নয়নমূলক কাজ হয়ে থাকে তার দেখভাল ও বিল ভাউচার দেখে থাকেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। কারণ চুড়ান্ত বিলে স্বাক্ষর হবার পর কাজের টাকা উত্তোলন হয়। বেশ কিছুদিন ধরে জেলার সদর উপজেলা, আলমডাঙ্গা, জীবননগর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার (পিআইও) নেই। দামুড়হুদা উপজেলার একজন কর্মকর্তা তিনি একাই কাজের তদারকি করেন নিজ উপজেলাসহ বাকি তিন উপজেলার কাজ। ফলে কর্মকর্তা না থাকায় সকল প্রকার উন্নয়নমূলক কর্মকা- দেখভাল করা যেমন বিঘিœত হচ্ছে তেমনি সদর উপজেলা এবং জীবননগর উপজেলার শূন্য পদে কবে আসবে কর্মকর্তা তার উত্তর নেই কারো কাছে। এ সমস্ত দফতরে কাজ করতে আসা মানুষগুলোকে দিনের পর দিন ভোগান্তি পোয়াতে হচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলা পর্যায়ে কাজ করে এমন দফতরগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং উল্লেখযোগ্য অফিস হচ্ছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। আর এ অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা হচ্ছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার (পিআইও)। বর্তমানে সকল উপজেলায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার নিযুক্ত রয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সরকারের খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে। উক্ত অফিস ত্রাণ ও পুর্বাসন অধিদফতর কর্তৃক পরিচালিত হয়ে থাকে। এছাড়া সার্বিকভাবে বাস্তবায়িত কর্মসূচি সমূহ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তত্ত্বাবধান করে থাকেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কর্মসূচি সরাসরি তত্ত্ববধানের জন্য জেলা পর্যায়ে রয়েছে জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন অফিসারের কার্যালয়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস যেসমস্ত কাজ করে থাকে তার মধ্যে রয়েছে, কাজের বিনিময়ে খাদ্য, কাজের বিনিময়ে টাকা, টেস্ট রিলিফ, অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি, ভিজিএফ কর্মসূচির মত সর্ববৃহৎ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কাজ বাস্তবায়ন করে থাকে। এছাড়া দুর্যোগ পরবর্তী সার্বিক ত্রাণ কর্মসূচির যাবতীয় কাজও করে থাকে। এ সমস্ত কর্মসূচির পাশাপাশি উন্নয়নমূলক কাজ হিসাবে গ্রামীণ রাস্তায় সেতু নির্মাণেরও কাজ করে থাকে। উপজেলা পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা প্রতিবছর গড়ে দশ থেকে পনের কোটি (উপজেলা ভেদে কমবেশি) টাকার সামাজিক নিরাপত্তা, উন্নয়নমূলক ও ত্রাণ কার্যক্রম করে থাকে। বেশ কিছুদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা সদর ও জীবননগর উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নেই। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা এবং জীবননগর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসারের পদ শূন্য আছে। দামুড়হুদা উপজেলার একজন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন একাই নিজ উপজেলাসহ বাকি তিনটি উপজেলার কাজ দেখভাল করে থাকেন। ফলে স্বাভাবিক কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আবার উপজেলা পর্যায়ের যেসমস্ত উন্নয়নমূলক কর্মকা- হচ্ছে তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি-না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন? পাশাপাশি এ অফিসে কাজ করতে আসা মানুষগুলোকে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। তিতুদহ ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন এবং বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন জোয়ার্দ্দার বলেন, উপজেলা পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস একটি গুরুত্বপূর্ণ দফতর। আর জেলার এ চার দফতরে একজন মাত্র পিআইও। তার ওপর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার অফিস সহকারী পর্যন্ত নেই। বেশকিছুদিন থেকে ভোগান্তি পোয়াতে হচ্ছে। একজনের পক্ষে চার জায়গায় কাজ করা অসম্ভব। এ বিষয়ে চার উপজেলায় দায়িত্বরত দামুড়হুদা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আশরাফ হোসেন বলেন, এখন উপজেলাতে তেমন কাজ নেই। চলতি মাস থেকে কাজ শুরু হবে। তাই কোনো সমস্যা হচ্ছে না। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও জীবননগর উপজেলার পদ শূন্য থাকলেও আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার প্রশিক্ষণে আছে খুব শিঘ্রই চলে আসবে।

Leave a comment