যাত্রী দূর্ভোগ লাঘবে দর্শনা ও গেদে স্টেশনে কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে অচিরেই!

মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীরা পেতে যাচ্ছে বিমানের সুবিধা
দর্শনা অফিস: বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর ইংরেজরা রেলগাড়ি চালু করে। তখন ভারতের কোলকাতা থেকে বাংলাদেশের দর্শনা হয়ে কুষ্টিয়া জেলার জগতি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। ১৯৪৭ সালে ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটলে হয় দেশ বিভক্তি, জন্ম হয় পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্যদিয়ে সর্বভৌম স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়। ১৯৬৫ ভারত-বাংলাদেশ যাত্রীবাহি ট্রেন চলাচল বন্ধ হলেও মালবাহি ট্রেন চলাচল আজ অবধি চালু রয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দীর্ঘ আলোচনার পর যাত্রী যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করণে ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল ফের শুরু হয় যাত্রীবাহি ট্রেন চলাচল। আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় মৈত্রী এক্সপ্রেস। শুরুর দিকে যাত্রী সংখ্যা কিছুটা কম হওয়ায় খানেকটা লোকসান গুনেছে দুদেশের সরকার। সে লোকসান খুব বেশিদিন গুনতে হয়নি। বছর না ঘুরতেই যাত্রী সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় ট্রেনের বগিও বাড়ানো হয়। বর্তমানে ১০ বগি বিশিষ্ট মৈত্রী এক্সপ্রেস প্রতি সপ্তাহে ৬টি ট্রেন চলাচল করছে। বাংলাদেশ থেকে ছাড়ার সময় প্রতিটি ট্রেনেই যাত্রী সংখ্যা থাকে কানায় কানায়। দর্শনা আন্তর্জাতিক স্টেশন মাস্টার মীর লিয়াকত আলী জানিয়েছেন, ট্রেনের নির্ধারিত আসন ৪৫৬টি। ভারতে যাওয়ার পথে ৪৫৬টি আসনের টিকিট বিক্রি হয়ে থাকে। প্রায় ১ হাজার ৯শ টাকা মূল্যের টিকিট বিক্রি হয়ে থাকে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে। তবে ভারত থেকে ফেরার পথে যাত্রী সংখ্যা কিছু কম থাকে। সরকার যাত্রী সুবিধা নিশ্চিত করণের কারণেই কোনো কোনো যাত্রী বিকল্প ব্যবস্থায় দেশে ফিরে। এদিকে মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের কাস্টমস, ইমিগ্রেশনসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রমের জন্য দর্শনা আন্তর্জাতিক স্টেশন ও ভারতের গেদে স্টেশনে প্রায় ৩ ঘন্টা সময় ব্যায় করতে হয়। মাত্র ২ কিলোমিটারের ব্যবধানে দুটি স্টেশনে থামতে হয় ট্রেনটি। ফলে হয়রানির শিকার হতে হয় যাত্রীদের। যাত্রীদের সুবিধা নিশ্চিত ও অল্প সময়ে যাত্রার লক্ষ্যেই দুদেশের রেল মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে গ্রহণ করা হচ্ছে নতুন নিয়ম। সুত্র বলেছে, চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে ঢাকা ক্যান্টনম্যান স্টেশন থেকে যাত্রীবাহি মৈত্রী এক্সপ্রেস ছেড়ে ভারতের কোলকাতা চিৎপুর স্টেশনে যাত্রা বিরতি করবে। এতোদিন দর্শনা ও গেদে স্টেশনে নামতে হতো যাত্রীদের। মালপত্রসহ ট্রেন থেকে নেমে যেতে হতো অভিবাসন ও শুল্ক সংক্রান্ত পরীক্ষার জন্য। যেখানে অতিরিক্ত সময় ব্যয় হতো কমপক্ষে ৩ ঘন্টা। বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক যাত্রীদের অভিবাসন ও শুল্ক সংক্রান্ত পরীক্ষার মতোই মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীরা স্টেশন থেকেই সেই কাজ সারতে পারবেন। ফলে যাত্রার সময়ও কমবে কমপক্ষে তিন ঘন্টা। বর্তমানে ট্রেনটি ঢাকা থেকে কোলকাতা পর্যন্ত পৌঁছাতে প্রায় ৯ ঘন্টা সময় লাগে। এ নিয়ম শুরু হলে ৩ ঘন্টা কমে মাত্র ৬ ঘন্টায় যাতায়াতের সুবিধা ভোগ করবে যাত্রী সাধারণ। মীর লিয়াকত আলী জানান, এখনো পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোনো পত্র আমরা হাতে পাইনি। তবে শুনেছি এ নিয়ম চালু হতে যাচ্ছে।