প্রথম দিনে চুয়াডাঙ্গায় ৫৩২ ও মেহেরপুরে ২৩৮ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত

সারাদেশে জেএসসি জেডিসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু

স্টাফ রিপোর্টার: জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা গতকাল বুধবার থেকে শুরু হয়েছে। প্রথমদিনেই অনুপস্থিত ছিলো ৬০ হাজার ৮৯৩ জন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার প্রথমদিনে ২৩ লাখ ৯০ হাজার ১৩৪ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ করার কথা ছিলো। তবে অংশ নিয়েছে ২৩ লাখ ২৯ হাজার ২৪১ জন। এছাড়া অসুদপায় অবলম্বনের দায়ে ১৬ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে চারজন, কুমিল্লায় একজন, যশোরে দুইজন এবং মাদরাসা বোর্ডে ৯ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। তবে কোনো শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়নি।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, সবচেয়ে বেশি অনুপস্থিত ছিল মাদরাসা বোর্ডে ১৯ হাজার ৫১৫ জন। এরপর ঢাকা বোর্ডে ১৩ হাজার ৮৭৮ জন, রাজশাহীতে ৪ হাজার ৮১২ জন, কুমিল্লায় ৪ হাজার ৬৭০ জন, যশোরে পাঁচ হাজার ৩০ জন, চট্টগ্রামে ২ হাজার ৯০৩ জন, সিলেটে ২ হাজার ৪৫২ জন, বরিশালে ৩ হাজার ৩৭৬ জন এবং দিনাজপুর বোর্ডে অনুপস্থিত ছিল ৪ হাজার ২৫৭ জন।
পরীক্ষার প্রথম দিনে চুয়াডাঙ্গায় ৫৩২ ও মেহেরপুরে ২৩৮ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। চুয়াডাঙ্গায় জেএসসি, জেডিসি, এসএসসি (ভোকেশনাল) এবং দাখিল (ভোকেশনাল) নবম শ্রেণি ও সমমানের পরীক্ষা। গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত জেএসসি বাংলা প্রথমপত্র, জেডিসিতে কোরআন মাজিদ ও তাজবিদ এবং এসএসসি (ভোকেশনাল) এবং দাখিল (ভোকেশনাল) নবম শ্রেণি বাংলা প্রথমপত্র বিষয়ের মধ্যদিয়ে শুরু হয় পরীক্ষার আনুষ্ঠানিকতা। পরীক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কেন্দ্রের ভেতর ও আশপাশে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ২৯ কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ হাজার ১’শ ৮৩ জন। প্রথম দিনে জেলায় মোট অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৩২ জন। তবে কোনো শিক্ষার্থী বহিষ্কারের খবর পাওয়া যায়নি। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় মোট ৭টি কেন্দ্র। জেএসসিতে ভি.জে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ হাজার ৪৯৯ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা থাকলেও অনুপস্থিত ছিলো ২১ জন। চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১ হাজার ৫৫৭ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৩০ জন, সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬৭১ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৩২ জন ও ছাদেমান নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ১ হাজার ৬৪ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৩৫ জন। জেডিসিতে চুয়াডাঙ্গা ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে ৩৬৭ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ২৫ জন। ভোকেশনালে সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২৩৯ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ১ জন এবং চুয়াডাঙ্গা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৩৯২ জনের মধ্যে ৬ জন অনুপস্থিত ছিলো। দামুড়হুদা উপজেলায় মোট ৭ কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। জেএসসিতে দামুড়হুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭৪০ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ১৭ জন, মেমনগর বিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮৮৭ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ২৫ জন, কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৭৬৬ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ২৭ জন ও দামুড়হুদা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ১ হাজার ২০ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৪৩ জন। জেডিসিতে দামুড়হুদা ডিএস দাখিল মাদরাসা কেন্দ্রে ৩৩১ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৪ জন এবং কার্পাসডাঙ্গা ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসায় ২৭৬ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ১২ জন। ভোকেশনালে দামুড়হুদা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ২৮৪ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৮ জন।
আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৭ কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেএসসিতে আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৯৪১ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ২৩ জন, মুন্সিগঞ্জ একাডেমীতে ১ হাজার ১৭৭ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ৩৪ জন, আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ১ হাজার ৩৪১ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ২৭ জন ও হাটবোয়ালিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮১৩ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ১৬ জন। জেডিসিতে আলমডাঙ্গা সিদ্দিকিয়া আলিম মাদরাসা কেন্দ্রে ৪২৫ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ২৩ জন। ভোকেশনালে আলমডাঙ্গা সিদ্দিকিয়া আলিম মাদরাসা কেন্দ্রে ৯৩ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৪ জন এবং আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩৩৪ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ২০ জন। জীবননগর উপজেলায় মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৮। জেএসসিতে জীবননগর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭০১ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ২১ জন, আন্দুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪৬৩ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ১৫ জন, হাসাদাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪২০ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ১০ জন, উথলী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ৩৩৯ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ১৯ জন ও মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩২৬ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৬ জন। জেডিসিতে জীবননগর উপজেলা আলিম মাদরাসা কেন্দ্রে ৩৫৩ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ১৫ জন। ভোকেশনালে জীবননগর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৯১ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৪ এবং জীবননগর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৭৩ জনের মধ্যে ৯ জন অনুপস্থিত ছিলো।
এদিকে সকালে জেলা সদরের কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার ফরহাদ আহমদসহ প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ একাডেমি কেন্দ্র পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবদুর রাজ্জাক। এছাড়া ওই কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বে ছিলেন এনডিসি সুচিত্র রঞ্জন দাস। তিনি কেন্দ্রের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। অন্যদিকে পরীক্ষার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কেন্দ্রের ভেতর ও আশপাশে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যাতিত কাউকে পরীক্ষা কেন্দ্রে দেখা গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ জিয়া ।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরের মোট ১০ টি কেন্দ্রে যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (জেএসসি) শুরু হয়েছে। জেএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে ১০ হাজার ৪৫২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০ হাজার ২১৪ জন উপস্থিত ও ২৩৮ জন অনুপস্থিত ছিল। এছাড়া বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ঢাকার অধীনে জেলার মোট ২ টি কেন্দ্রে জুনিয়র দাখিল পরীক্ষা (জেডিসি) পরীক্ষা শুরু হয়েছে। জেডিসি পরীক্ষায় মোট ৭৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭২৮ জন উপস্থিত ও ৫২ জন অনুপস্থিত ছিল। প্রথম দিনে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় কক্ষ পরিদর্শক ও পরীক্ষার্থীদের কেউ বহিস্কার হয়নি।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের শিক্ষা শাখার দেয়া তথ্যমতে এবছর প্রথম দিনে মেহেরপুর সদর উপজেলার মোট ৩ টি কেন্দ্রে জেএসসি পরীক্ষার বাংলা ১ম পত্রে মোট ৪ হাজার ৬৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩ হাজার ৯৫২ অংশগ্রহণ করে এবং অনুপস্থিত ছিল ১১১ জন। যার মধ্যে মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ হাজার ৯৬৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৯০৩ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। অনুপস্থিত ছিল ৬৬ জন। মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক হাজার ১৪৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে এক হাজার ১২২ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। অনুপস্থিত ছিল ২৪ জন। এছাড়া আমঝুপি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৯৪৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯২৭ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। আর অনুপস্থিত ছিল ২১ জন। গাংনী উপজেলার মোট ৬ টি কেন্দ্রে জেএসসি পরীক্ষায় মোট ৪ হাজার ৬৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪ হাজার ৫৭০ অংশগ্রহণ করে ও অনুপস্থিত ছিল ১১০ জন। এদের মধ্যে গাংনী পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে মোট ৯৮৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৬২ অংশ গ্রহণ করে ও অনুপস্থিত ছিল ২১ জন। গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে মোট ১ হাজার ৩৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ১৭ জন অংশগ্রহণ করে ও অনুপস্থিত ছিল ১৮ জন। বামুন্দী-নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে মোট ৯৪৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৩৬ অংশগ্রহণ করে ও অনুপস্থিত ছিল ১২ জন। যুগিরঘোপা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ৬১৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫৯৬ অংশগ্রহণ করে ও অনুপস্থিত ছিল ২০ জন। সাহেবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ৪৩৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪১৩ অংশগ্রহণ করে ও অনুপস্থিত ছিল ২২ জন। বামুন্দী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ৬৬৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬৪৬ অংশগ্রহণ করে ও অনুপস্থিত ছিল ১৭ জন।
এছাড়া মুজিবনগর উপজেলার একমাত্র কেন্দ্র মুজিবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট এক হাজার ৭০৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে এক হাজার ৬৯২ অংশগ্রহণ করে ও অনুপস্থিত ছিল ১৭ জন। এদিকে মেহেরপুর সদর উপজেলার একমাত্র কেন্দ্র মেহেরপুর দারুল উলুম আহমদিয়া ফাজিল মাদরাসায় মোট ৪৯৫ জন জেডিসি পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৬১ অংশগ্রহণ করে ও অনুপস্থিত ছিল ৩৪ জন এবং গাংনী উপজেলার একমাত্র কেন্দ্র গাংনী আমিনিয়া ছিদ্দিকিয়া মাদ্রাসায় মোট ২৮৫ জন জেডিসি পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৬৭ অংশগ্রহণ করে ও অনুপস্থিত ছিল ১৮ জন। এদিন জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার কেন্দ্র ঘুরে দেখেন জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকবৃন্দ ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাবৃন্দ।