গাংনী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড উপনির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন
গাংনী প্রতিনিধি ঃ সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশের মধ্য দিয়ে মেহেরপুর গাংনী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদের উপ-নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট প্রদান করেন নারী-পুরুষ ভোটাররা। নির্বাচনে ৩৫২ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন মিজানুর রহমান মদন। উটপাখি প্রতীকে তিনি ভোট পেয়েছেন ৯৯২টি। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সামসুদ্দীন শেখ তার ডালিম প্রতীকে পেয়েছেন ৬৪০ ভোট।
বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান।
ওয়ার্ডটিতে ২ হাজার ১৪০ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন ১ হাজার ৬৮১ জন। বাতিল হয় ৪৯ ভোট। এর আগে ২০০৩ সালের পৌর নির্বাচনে মিজানুর রহমান মদন কমিশনার (তখন কাউন্সিলর পদের নাম ছিল কমিশনার) বিজয়ী হয়েছিলেন। ২০১৫ সালের পৌর নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। দীর্ঘদিন পরে আবারও তিনি বসতে যাচ্ছেন পূর্বের সেই আসনে।
এদিকে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ ছিলো শান্তিপূর্ণ। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রদান করেন ভোটাররা।
মিজানুর রহমান মদন ও সামসুদ্দীন দু’জনই সাবেক কাউন্সিলর এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক। বিএনপি সমর্থক দুই প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন না। একজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ও অন্যজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। ফলে শেষ পর্যন্ত দুই সাবেক কাউন্সিলরের মধ্যে ভোট যুদ্ধ গড়ায়। নানা সমীকরণ এবং ভোট কৌশলের মধ্য দিয়ে প্রচারণা শেষ হয়।
বিকেলে ফলাফল ঘোষণার পর বিজয়ী প্রার্থীকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন তার কর্মী-সমর্থকরা। স্কুল মাঠ থেকে তারা স্লোগান দিয়ে মদনকে নিয়ে বাঁশবাড়িয়া বাজার ঘুরে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসময় পরাজিত প্রার্থী সামসুদ্দীনকে বুকে জড়িয়ে ধরেন মদন। নিজের গলায় থাকা মালা খুলে পরিয়ে দেন সামসুদ্দীনের গলায়। এসময় উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ করতালি দিয়ে সাধুবাদ জানান। বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর মধ্যে এ ধরনের সৌহার্দপূর্ণ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। প্রতিটি নির্বাচনেই সুষ্ঠু পরিবেশ ও প্রার্থীদের এমন আচরণ নিশ্চিত করার দাবি করেন ভোট সংশ্লিষ্ট অনেকেই। বিজয়ী মিজানুর রহমান মদনকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
এদিকে ভোটের আগের দিন বিকেল থেকেই গাংনী থানা পুলিশের পক্ষ থেকে কেন্দ্র ও কেন্দ্রের আশেপাশে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেন গাংনী থানার ওসি আনোয়ার হোসেন। ফলে জনমনে সুষ্ঠু পরিবেশের বিষয়টি সৃষ্ট হয়। এতে ভোটের আগে রটে যাওয়া নানা আশংকা দূর হয়। ফলে ভোটাররা নির্বিঘেœ ভোটকেন্দ্রে পৌঁছায় বলে মতামত ব্যক্ত করেন সাধারণ ভোটাররা।
ভোট পরিচালনার বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) শেখ মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা নির্বাচন অফিসার আহমদ আলী, গাংনী থানার ওসি আনোয়ার হোসেন, উপজেলা নির্বাচন অফিসার রশিদুল ইসলাম।