নভেম্বরে সাংস্কৃতিক সপ্তাহে ক্রিকেট ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট

চুয়াডাঙ্গায় জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দিন আহমেদের ঘোষণা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেছেন আগামী নভেম্বর মাসে সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদযাপন করা হবে। এতে ৩ দিন করে যাত্রা ও নাটক থাকবে। পাশাপাশি ক্রিকেট, ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। মাদকের সাথে জড়িত ৪ শতাধিক মানুষের নাম পেয়েছি। তারা যদি মাদকব্যবসা ও সেবনকারী থেকে দূরে সরে না আসেন ১ মাস পর তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে। গতকাল রোববার বেলা ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ এসব মন্তব্য করেছেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যজিস্ট্রেট (এডিএম) গত সভার রেজুলেশন পাঠ করে শোনান। সভায় জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মাহবুবুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. দিলীপ কুমার রায়, পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তরিকুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহ, ৬-বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের (বিজিবি) সহকারী পরিচালক শাহজাহান আলী, আনসার ও ভিডিপির কমান্ড্যান্ট আশরাফুল ইসলাম, জীবননগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি দে, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহাত মান্নান, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল হাসান, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম, সরকারি কৌশলী (জিপি) মোল্লা আব্দুর রশিদ, অ্যাড. আকসিজুল ইসলাম রতন (এপিপি), জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক রবিউল ইসলাম, সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মোহাম্মদ, আরমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আকরাম হোসেন, দামুড়হুদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আবু জিহাদ মো. ফকরুল আলম খান ও জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক এনামুল হকসহ সরকারি কর্মকর্তা ও বিভিন্ন দফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ আরও বলেন, মেলার নামে যেসব হয়েছে তা মেলা মানে মেলা নয়। অসামাজিক কার্যকলাপ। সেটা বন্ধ করেছি। ইতোমধ্যে শর্ত ভঙ্গের দায়ে একজনের ২ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আমি চাই শর্ত মেনে মেলা চলুক। সরকারি চাকরিতে ঘুষ লাগে না। কিছুদিন আগে সরকারি চাকরিতে ২০ জনের মধ্যে ১৭ জন নিয়োগ পেয়েছে বিনা টাকায়। রাস্তার ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা হয়েছে। আবার করা হবে। এজন্য একটি গাছ কাটার মেশিন ক্রয় করা হয়েছে। জেলায় ১ ঘণ্টায় সাড়ে ৭ লাখ গাছের চারা ও তালবীজ রোপণ করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গাকে ভিক্ষুকমুক্ত জেলা করা হয়েছে। শতকরা ৭০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি শতকরা ৩০ ভাগ পুনর্বাসন করা হবে। এরপর সমাজসেবার কেন্দ্রে তাদের রাখা হবে। দেশে আত্মহত্যার প্রবণতায় ২য় শীর্ষে এবং বাল্যবিয়েতে ৪র্থ স্থানে অবস্থান করছে চুয়াডাঙ্গা। এজন্য কাজিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভলিউম বই সংগ্রহ করতে জেলা রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জুম্মার নামাজে মসজিদের ইমামদেরকে স্বেচ্ছায় জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচারণা চালাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। সবজি বাজার রাস্তা থেকে সরিয়ে শেডে নিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বাল্যবিয়ের অভিযোগে কাজি ও অভিভাবকদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে মাইকিং করা হয়েছে। কেউ সরিয়ে না নিলে ভাঙার খরচ ওই ব্যক্তিকে দিতে হবে।’
গরুচোর আটক ও ডিসি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রশংসা করে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ভালো পর্যায়ে রয়েছে। এখানে ৩১টি পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। ক্যাম্প ইনচার্জদেরকে হোয়াটস আপ ও ইমো ব্যবহারে অভ্যস্থ করা হবে। সঠিক বিচারের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে তারা। সাথে সাথে ছবি পাঠাবে। হাসপাতালকে দালালমুক্ত করতে কাল থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। হাসপাতাল রোডকে ওয়ানওয়ে করতে রাজনৈতিক নেতাদের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এখানকার মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করে যাবো। যদি ১ মাসও থাকি চলে যাবার পর মানুষ যাতে মনে রাখে।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, ১ লাখ টাকা ব্যয়ে সাপের কামড়ের ওষুধ এন্টি¯েœক ভেনম ৫০ অ্যাম্পুল ও কুকুরের কামড়ের ওষুধ রাবিপুর আড়াইশ অ্যাম্পুল কেনা হয়েছে। গত ১ বছরে সাপের কামড়ে ১৯৪ জন চিকিৎসা নিয়েছে। এরমধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১০ লাখ টাকা রয়েছে চিকিৎসা কমিটির কাছে। অথচ, সাপের কামড়ে বিনা চিকিৎসায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আমি মর্মাহত। হাসপাতালকে দালালমুক্ত করতে সকাল ৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত দুজন পুলিশ মোতায়নের অনুরোধ করছি।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান বলেন, ছাত্র-যুব সমাজকে ভালোর দিকে নিয়ে যেতে খেলার কোনো বিকল্প নেই। ফুটবল খেলার সাফল্যেই দলের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি জেলা প্রশাসককে। অ্যাড. আকসিজুল ইসলাম রতন বলেন, শহরের মুসলিমপাড়া ও আকন্দবাড়িয়া গ্রামে মাদকের বেচা-বিক্রির মহাউৎসব চলে। তার চেয়েও ভয়াবহ ব্যাপার জেলা কারাগারের অভ্যন্তরে মাদক অবাধে বিক্রি ও সেবন। জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তি দাবি করছি।