স্টাফ রিপোর্টার: তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আলমডাঙ্গা ভেদামারী গ্রামে উপর্যুপরি লাথি ও পিটিয়ে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর গর্ভের সন্তান হত্যার ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় নির্যাতিত গৃহবধূর পরিবার মামলা করতে ভয় পাচ্ছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা ভেদামারী গ্রামে মুরগি মারাকে কেন্দ্র করে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার ভাদু ম-লের সাথে প্রতিবেশী মনোয়ার মোল্লার ছেলে রইচ উদ্দীনের হাতাহাতি হয়। ওই দিনই গ্রামের ডালিম মেম্বার বিষয়টি সালিসের মাধ্যমে মীমাংসা করে দেন। মীমাংসার পর পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মনোয়ার মোল্লার বাড়ির সামনে গেলে মনোয়ার মোল্লার ছেলে রইচ উদ্দীন ভাদু ম-লের ছেলে মিয়াজানের ওপর চড়াও হয়। রইচ উদ্দীন অভিযোগ তোলেন মিয়াজান তাদের ছাগল মেরেছেন। ছাগল মারার অভিযোগ মিয়াজান অস্বীকার করলে তাকে রইচ উদ্দীন ও তার আরেক ভাই বকুল মারধর করেন। এ ঘটনা জানতে পেরে মিয়াজানের ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রেহেনা খাতুন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। কেন তার নিরাপরাধ স্বামীকে মারধর করা হচ্ছে প্রশ্ন তুললে তাকেও মারধর করা হয়। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মারধরের দৃশ্য উপভোগ করা রইচ উদ্দীনের স্ত্রী নাজমা খাতুন প্রথমে রেহেনা খাতুনকে চুল ধরে টেনে মাটিতে ফেলে দেন। পাশে থাকা লাঠি দিয়ে তার পেটে খোঁচা মারেন। লাঠির খোঁচায় অন্তঃসত্ত্বা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে রইচ উদ্দীন ও বকুল দু ভাই তার পেটে লাথি মারেন বলে রেহেনা খাতুন জানান। লাঠির খোঁচা ও উপর্যুপরি লাথিতে রেহেনা খাতুনের পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। সাথে রক্তপাত। তাকে ওই দিনই আলমডাঙ্গার একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। রোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে হারদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার্ড করেন। সেখানেও অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১ অক্টোবর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেহেনা খাতুন একটি মৃত সন্তান প্রসব করেন। নবজাতিকার মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিলো।
এদিকে, এ ঘটনায় এখন মামলা দায়ের হয়নি। নির্যাতনকারীরা গ্রামের প্রভাবশালী হওয়ায় নির্যাতিত রেহেনার পরিবার মামলা করতে ভয় পাচ্ছে বলে পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে।