রাখাইনে অভিযান বন্ধের আহ্বান

মাথাভাঙ্গা মনিটর: রাখাইন থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের সমাধানে মিয়ানমার সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এছাড়া দ্বন্দ্ব-সংঘাতপূর্ণ রাখাইনে মানবাধিকার কর্মী প্রবেশ নিশ্চিত করার জন্য তাগিদ দেন তিনি। রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উন্মুক্ত আলোচনায় আন্তোনিও গুতেরেস এ আহ্বান জানান। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংসতা নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে উন্মুক্ত আলোচনায় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সহিংসতা ছাড়াই রোহিঙ্গাদের নিজ গ্রামে ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা, রাখাইনে সেনা অভিযান বন্ধ করা, মানবাধিকার কর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীদের রাখাইনে প্রবেশ নিশ্চিত করার তাগিদ দেন।

২০০৫ সালের পর প্রথমবারের মতো পূর্বনির্ধারিত আলোচ্যসূচিতে এসেছে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ। ১৩ সেপ্টেম্বরের পর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো রোহিঙ্গা পরিস্থিতি আলোচনা চলছে নিরাপত্তা পরিষদে।
এদিকে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের কাছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আশা করছে বাংলাদেশ। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের সাত সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সুইডেন, মিসর, কাজাখস্তান ও সেনেগাল ২৩ সেপ্টেম্বর ওই আলোচনার প্রস্তাব দেয়। এসব দেশ জাতিসংঘের মহাসচিবকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতির বিষয়ে পরিষদকে বিস্তারিত জানানোরও অনুরোধ জানায়। মহাসচিব গুতেরেস অধিবেশনের শুরুতে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে বক্তব্য দেন। তিনি গণমাধ্যমে প্রকাশিত রাখাইনে সহিংসতার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অধিবেশন শেষে একটি বিবৃতি প্রচার হতে পারে।

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনার পর ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ কোনো প্রস্তাব নেয় কি-না, সেটাই দেখার অপেক্ষা। এর আগে নিউইয়র্কের কূটনৈতিক সূত্রগুলো অবশ্য আভাস দিয়েছে, বৃহস্পতিবারের আলোচনা শেষে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট কোনো প্রস্তাব না-ও হতে পারে। এখনই মিয়ানমারের ওপর বেশি চাপ দিলে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি বিপাকে পড়েন কি-না, সেটি নিয়েও পাশ্চাত্যে অনেকে ভাবছেন। সু চির দল এনএলডি সরকার চালালেও কার্যত রাষ্ট্র পরিচালনায় সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব অটুট আছে। এ পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের ওপর বাইরের চাপ সেনাবাহিনীকে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নেয়ার পথ করে দেবে, অনেকে এমন আশঙ্কাও করছেন।

Leave a comment