দেবীর আগমন নৌকায় চড়ে বিদায় নেবেন ঘোড়ায় চড়ে

সনাতন ধর্মালম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা আজ শুরু

স্টাফ রিপোর্টার: বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা আজ ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে। আগামী শনিবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনের এ উৎসবের। আজ সকালে ৬টা ৩০ মিনিটে কল্পারম্ভ এবং বিকেল ৪টায় বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে উৎসবের প্রথম দিন ষষ্ঠী পূজা সম্পন্ন হবে। এদিন সকাল থেকে চণ্ডিপাঠে মুখরিত থাকবে সব মণ্ডপ এলাকা। রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ জানান, সনাতন বিশ্বাস ও বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় এবার দেবীর আগমন নৌকায় চড়ে এবং বিদায় নেবেন ঘোড়ায় চড়ে। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গায় এ বছর ৯৬ পুজামণ্ডবে শারদীয় উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ মদ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ২৭, আলমডাঙ্গায় ২৭, দামুড়হুদায় ১৯ এবং জীবননগর উপজেলায় ২২ মণ্ডবে শারদীয় উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। মেহেরপুরে এবার ৩৪ মণ্ডবে শারদীয় উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এরমধ্যে মেহেরপুর সদরে ১১, গাংনীতে ১৬  এবং মুজিবনগরে ৭ মণ্ডবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এদিকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে এক ভয়াবহ অমানবিক সমস্যার সম্মুখীন হওয়ায় দুর্গাপূজায় উৎসবের খরচ বাচিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ। এই সিদ্ধান্তের কথা দেশের পূজা কমিটিগুলোকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিষদ নেতৃবৃন্দ। দুর্গা শব্দের অর্থ হলো আবদ্ধ স্থান। যা কিছু দুঃখ-কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘ্ন, ভয়, দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকাররা দুর্গার নামে অন্য একটি অর্থ করেছেন। দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন। উমা থেকে পার্বতি। তারপর পার্বতি থেকে দুর্গা। এই নামেই তিনি বেশি পরিচিত। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরানে আছে তিনি গিরিরাজ হিমালয়ের কন্যা ও পর্বতের অধিষ্ঠাত্রী দেবী, তাই তিনি পার্বতি। পরের অধ্যায়ে তিনি হয়ে উঠেন দানব দলনী দশভুজা। আর তখনিই তার নাম হয় দুর্গা। দুর্গাপূজার সঠিক সময় হলো বসন্তকাল। কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি বসন্তকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবিকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া সত্ত্বেও শরৎকালে দুর্গাপূজা প্রচলিত হয়ে যায়। শারদীয় উৎসবকে ঘিরে প্রশাসন তিনস্থরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।

Leave a comment