স্টাফ রিপোর্টার: পৃথক বজ্রপাতে চার জেলায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। সুনামগঞ্জ, নীলফামারী, দিনাজপুর ও গাইবান্ধায় পৃথক ঘটনায় এ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দিনাজপুরের বিরল, বোঁচাগঞ্জ, খানসামা এবং চিরিরবন্দরে শিশু ও নারীসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় পৃথক ঘটনায় বজ্রপাতে স্কুল শিক্ষার্থীসহ দুজনের মৃত্যু হয়। আজ শনিবার সকাল ৮টার দিকে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। নিহতেরা হলেন, সুজাত মিয়া (১৬) ও আবদুল আহাদ (৪৫)। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জগন্নাথপুরে গতকাল সকালে বৃষ্টি হয়। সকাল ৮টার দিকে সুজাত মিয়া স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। পথে বজ্রপাতে কবলে পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সুজাত মিয়া স্থানীয় আটপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলো। অপর ঘটনাটি ঘটে কামালখাল গ্রামে। আবদুল আহাদ সকালে গ্রামের পাশের হাওরে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। সেখানেই বজ্রপাতে তিনি মারা যান। জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী, বজ্রপাতে এক শিক্ষার্থীসহ দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামে বজ্রপাতে গোলজার হোসেন (৩৪) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। গতকাল শনিবার সকাল সাতটার দিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী খালে মাছ ধরার জন্য পেতে রাখা জাল তুলতে গিয়ে বজ্রপাতের শিকার হন তিনি। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম। গতকাল শনিবার দুপুর একটার দিকে বিরল, বোচাগঞ্জ, খানসামা এবং চিরিরবন্দরে পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় শিশু ও তিন নারীসহ ৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে ছয়জন। নিহতেরা হলেন- বিরলের রাজারামপুর গ্রামের উপেন্দ্র নাথ রায়ের ছেলে নব কিশোর রায় (১৪), প্রদীপ চন্দ্র রায়ের স্ত্রী অনিতা রানী রায় (৩০), দিনাজপুর সদর উপজেলার মহাদেবপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে মেছের আলী (৩২), মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে শুকুর উদ্দিন (৩৩), খানসামার বাবু পাড়ার দীনবন্ধু রায় (৪৮), বোঁচাগঞ্জের রনগাঁওয়ের মালতগাঁও গ্রামে নমানু রায়ের স্ত্রী গীতারানী (৩২), এবং চিরিরবন্দরের উপজেলার সাতনালা ইউনিয়নের জোত সাতনালা গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী সাহিদা বেগম (৩২)।
বিরল এবং বোচাগঞ্জের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. রেজাউল করিম জানান, শনিবার দুপুর ১টার দিকে রাজারামপুর ইউনিয়নের পুর্বরাজারামপুর গ্রামের নারী-পুরুষের একটি শ্রমিকের দল ধান ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কারের কাজ করছিলো। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হলে শ্রমিকেরা পাশের একটি মেশিন ঘরে আশ্রয় নেয়। সেখানে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়। আহতদের প্রথমে বিরল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারা যান। বোঁচাগঞ্জের রনগাঁও ইউনিয়নের মালতগাঁও গ্রামে বজ্রপাতে গীতারানী মারা যান।
চিরিরবন্দর এবং খানসামার পিআইও মো. মশিয়ার রহমান জানান, শনিবার সকাল ৭টার দিকে খানসামা উপজেলার দুয়ানি কাশিমনগর গ্রামে ফসলের খেতে কাজ করার সময় ব্রজপাতে দীনবন্ধু মারা যান। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে বজ্রপাতে চিরিরবন্দর উপজেলা সাতনালা ইউনিয়নের জোত সাতনালা গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী সাহিদা বেগম (৩২) মারা যান। দিনাজপুর জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত প্রত্যেক পরিবারকে বিশ হাজার করে নগদ অর্থ প্রদান করা হবে।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের বোয়ালি গ্রামে জাকির হোসেন (২৫) নামের এক যুবক বজ্রপাতে মারা গেছে। তিনি ওই গ্রামের রাজু মিয়ার ছেলে। দুপুর দুইটার দিকে জাকির হোসেন সুন্দরগঞ্জের ধর্মপুর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তায় বজ্রপাতে তিনি মারা যান। শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বিকেলে মুঠোফোনে বজ্রপাতে মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন।