ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে ভুয়া ডিগ্রিধারী ডাক্তারদের দৌড়াত্ম্য বেড়েই চলেছে। সাধারণ রোগীদের সাথে তারা প্রতারণা করে আসছেন। তাদের এ কাজের সাথে এক শ্রেণির প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ওষুধের ফার্মেসির লোকজন জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি কয়েকজন ভুয়া ডিগ্রিধারী ডাক্তার ধরা পড়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাদের কারাদণ্ড হয়েছে। তবু ভুয়া ডাক্তাররা থামছে না। এদের প্রেশক্রিপশনের ওষুধ খাওয়ার পর রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে বলে অভিযোগ। এসব ভুয়া ডাক্তাররা রোগী ধরার জন্য মাইকে চটকদার প্রচারণা চালায়। নিজেদের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বলে পরিচয় দেয়। নামের পেছনে বড় বড় ডিগ্রি লেখে থাকে। যা দেখে রোগীরা সহজে আকৃষ্ট হয়। গত ১৫ সেপ্টেম্বর শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ বাজারে ভাই ভাই ফার্মেসিতে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। সেখান থেকে রইস মিয়া নামে এক ভুয়া ডাক্তারকে আটক করে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে ৮ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার উসমান গনি। ওই ভুয়া ডাক্তার নিজেকে যৌন, চর্মসহ বিভিন্ন রোগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলো। তার আসল নাম বাবুল হোসেন। সে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উজানগ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে। গত ৯ আগস্ট ঝিনাইদহ শহরের পোস্ট অফিস মোড়ের মডেল ড্রাগ হাউজে অভিযান চালিয়ে অসিত কুমার নামে এক ভুয়া বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে ৩ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এর আগে মহেশপুর উপজেলা থেকে এক ভুয়া ডাক্তারকে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকেও কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। তারপরও ভুয়া ডাক্তারদের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ হচ্ছে না।
জানা যায়, ভুয়া ডাক্তারগণ যেসব প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ফার্মেসিতে বসে তার মালিকরা রোগী দেখে আদায়কৃত ফি এর একটা অংশ কমিশন হিসাবে পেয়ে থাকে। এর পাশাপাশি ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে সর্ব রোগের ওষুধ বিক্রি চলছে। মাইক বাজিয়ে, বাদ্য বাজনা বাজিয়ে ও নাচ-গান করে মজমা জমানো হয়। কখনো কখনো সাপ খেলা দেখিয়ে মানুষ জড়ো করা হয়। এরপর সর্বরোগের ওষুধ বিক্রি করা হয়। মাইকে এসব ওষুধ বিক্রেতারা এমন কথা বলে, শুনলে কানে আঙ্গুল দিতে হয়। তারা ভুয়া ড্রাগ লাইসেন্স ব্যবহার করে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাক্তার রাশেদা সুলতানা ভুয়া ডাক্তারদের দৌরাত্ম্যের কথা স্বীকার করে বলেন, বেশ কয়েকজন ভুয়া ডাক্তারকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেয়া হয়েছে। এরপর পরও ভুয়া ডাক্তারদের অপতত্পরতা বন্ধ হচ্ছে না। ভুয়া ডাক্তারের খোঁজ পেলে প্রশাসনকে জানানো হয় বলে তিনি আরো জানান।