মাথাভাঙ্গা মনিটর: টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী কার্যাদেশ প্রদানসহ বিভিন্ন দাবিতে ধর্মঘট ডেকেছেন বিনা মূল্যের পাঠ্যবই সরবরাহকারীরা। সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পাঠ্যবই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। চলতি বছরের পাঠ্যবই মুদ্রণ প্রক্রিয়ায় এমনিতেই ধীরগতি চলছে। এখনও অর্ধেকের মতো বইয়ের টেন্ডারই শেষ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে মুদ্রণকারীদের এ ধর্মঘটে আগামী বছরের বিনা মূল্যের পাঠ্যবই যথাসময়ে পৌঁছানো নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ধর্মঘটের বিষয়টি নিশ্চিত করে মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি তোফায়েল খান সোমবার বলেন, এনসিটিবি নিজেই নিজের শর্ত ও আইন-কানুন মানে না। তারা চায় বই ছাপার কাজটি ব্যর্থ হোক। এ কারণে নানা ধরনের বেআইনি কাজ করছে। তার প্রতিবাদে আমরা আজ বইয়ের মুদ্রণসহ সব ধরনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ অবস্থান অব্যাহত থাকবে। বিনা মূল্যের পাঠ্যবই মুদ্রণের সার্বিক কাজ পরিচালিত হচ্ছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা মুদ্রণকারীদের এ ধর্মঘটকে রাষ্ট্র ও জাতীয় চেতনাবিরোধী কাজ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তাদের কার্যক্রম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। মুদ্রণকারীরা নিজেদের স্বার্থে বিভিন্ন বিষয়ে বেআইনি দাবি ও শর্ত দিয়েছেন। সরকারি ক্রয় আইন (পিপিআর) অনুযায়ী তা মানা যায় না। তারপরও তা বিবেচনার লক্ষ্যে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। কিন্তু এরপরও জিম্মি করতে চাচ্ছেন তারা। রাষ্ট্রকে জিম্মি করলে তা রাষ্ট্র অবশ্যই দেখবে। বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য সরকার এবার ৫টি টেন্ডারে ভাগ করে ৩৫ কোটি ১৩ লাখ ২৬ হাজার ২০৭টি বই মুদ্রণ কাজ করাচ্ছে। এর মধ্যে নবম শ্রেণীর ১২টি পাঠ্যবই ‘সুখপাঠ্যকরণ’ নাম দিয়ে সংশোধন করে নতুনরূপে তৈরি করা হচ্ছে। এগুলো হল : বাংলা, ইংরেজি, পদার্থ, রসায়ন, জীববিদ্যা, উচ্চতর গণিত, বিজ্ঞান, বাংলাদেশের ইতিহাস ও সভ্যতা, অর্থনীতি, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় হিসাববিজ্ঞান ইত্যাদি। জানা গেছে, এসব বইয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি।
মাধ্যমিক স্তরের বাকি বইসহ দাখিল ও ইবতেদায়ি স্তরের বই নিয়ে আলাদা টেন্ডার দেয়া হয়েছে। এসব বইয়ের মুদ্রণ ও সরবরাহ কাজ চলছিল। কিন্তু এগুলোর মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ের মুদ্রণকাজ শুরু হয়েছে। তবে এখনও সরবরাহ শুরু হয়নি। প্রি-প্রাইমারি বইয়ের টেন্ডার এখনও শেষ হয়নি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বইয়ের টেন্ডারও এখন পর্যন্ত দেয়া হয়নি।
সূত্রগুলো জানায়, শুধু টেন্ডার প্রক্রিয়াতেই বেহাল দশা নয়, টেন্ডার কার্যক্রমে নানা অনিয়ম-দুর্নীতিরও অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে অভিযোগ জমা পড়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়ার এসব অনিয়মে এনসিটিবির একজন মাত্র ব্যক্তির জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্যক্তি একই সঙ্গে এনসিটিবির উৎপাদন ও বিতরণ শাখায় যখন কর্মরত ছিলেন তখন এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি মুদ্রণকারীদের