দেবী পক্ষের সূচনা, আজ মহালয়া

স্টাফ রিপোর্টার: পিতৃপক্ষ সমাপ্ত হলো। আজ মহালয়া। মৃত্তিকা থেকে অবয়ব পাচ্ছে শারদ প্রতিমা। খড়-কঞ্চি-মাটি-রং কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত ঠাকুর কারিগররা। পূজো এল বলে! ঢাকিদের দম ফেলার ফুরসত নেই, চলছে মহড়া। শরত্ এলো। শরতের বাতাসে এখন যেন মন্দ্রিত হচ্ছে ‘রূপংদেহি,জয়ংদেহি, যশোদেহি, দ্বিষোজহি’র সুর। হাওয়ার’ পরে এখন পূজো পূজো গন্ধ। উমাময় ঠাকুরঘর। এলো শাস্ত্রীয় দেবীপক্ষ। দক্ষিণায়নের দিন। শরতের মেঘ আনাগোনা করলেও আকাশে মাঝে মাঝেই বর্ষার ঘনঘটা। তারই মধ্যে সেজে উঠছে মণ্ডপগুলো। কৈলাশ শিখর থেকে তার আগমনী বার্তায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে উত্সবের রোশনাই। সনাতন হিন্দু বিশ্বাসে-দশভূজা শক্তিরূপেন দুর্গা মণ্ডপে মণ্ডপে অধিষ্ঠান করবেন। শেফালীঝরা শারদ প্রভাতে জলদকণ্ঠে চণ্ডিপাঠ আর  পিতৃপক্ষের তর্পণের সমাপন ঘটবে। অত:পর ঘনঘটার অমাবস্যা তিথিতে প্রাণে দ্যোত্না তুলে ঢাকে পড়বে কাঠি।

সৌর আশ্বিনের কৃষ্ণপক্ষের নাম মহালয়া। হিন্দু পুরাণে আছে: সৌর উত্তরায়ণকালে বিষ্ণুলোকে যখন দিন, যমলোকে তখন রাত-দক্ষিণায়ন। উত্তরায়ণের ছ’মাস দেবতারা জেগে থাকেন, বিষ্ণুলোকের তোরণ থাকে অবারিত। দক্ষিণায়নের ছ’মাস দেবতারা নিদ্রিত। কিন্তু যমলোকে দিনমান, দুয়ার খোলা। দক্ষিণায়নের পয়লা দিনে ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠেই বন্ধ দুয়ার ঠেলে পিতৃপুরুষেরা ছুটে আসবেন মর্তলোকে। এ সময় তারা থাকেন ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর। উত্তর পুরুষদের হাতে একটু শ্রাদ্ধাহার পেলেই তারা পরম তৃপ্ত। দুর্গোত্সবের তিন পর্ব যথা: মহালয়া, বোধন আর সন্ধিপূজা। মহালয়ায় পিতৃপক্ষ সাঙ্গ করে দেবীপক্ষের দিকে যাত্রা হয় শুরু। নির্ঘন্ট মেনে আজ চতুর্দশী প্রাত: ৬ টা ৩৮ ঘটিকায় মহালয়া বিহিত তর্পণ ও শ্রাদ্ধাদি। মহালয়া পার্বণশ্রাদ্ধ শ্রাদ্ধান্তর ষোড়শ পিণ্ডদান। ২৫ সেপ্টেম্বর পঞ্চমীর সায়ংকালে অকাল বোধনে খুলে যাবে মা দুর্গার শান্ত-স্নিগ্ধ অতল গভীর আয়ত চোখের পলক। দূর কৈলাশ ছেড়ে দেবী পিতৃগৃহে আসবেন নৌকায়। সনাতন বিশ্বাসে “শস্যবৃদ্ধিস্থাজলম।” অর্থ- অতিবৃষ্টি, বন্য, জলচ্ছ্বাসে একদিকে প্লাবিত হবে অন্যদিকে শস্য বাড়বে। দেবী প্রস্থান করবে ঘোটকে। ৩০ সেপ্টেম্বর বিজয়া দশমীতে ফিরবেন একই বাহনে।