তাপসের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই ॥ অফিস খুললেই তদন্ত প্রতিবেদন
জীবননগর ব্যুরো: বুধবারের বিক্ষোভ, মানববন্ধন, অবরুদ্ধ দশা, গলায় জুতোর মালা ও সর্বশেষ গ্রামবাসীর হুমকির মুখে গতকাল বৃহস্পতিবার স্কুলে যাননি প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার দাস ও সহকারী শিক্ষিকা শিউলী খাতুন। স্কুলে না গেলেও তারা শিক্ষা অফিস থেকে ছুটি নিয়েছিলেন কি-না তা অবশ্য জানা যায়নি। এদিকে প্রধান শিক্ষক তাপস কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন অন্ত নেই। তিনি যখন যে স্কুলে গেছেন সেই স্কুলেই ছাত্রীদের সাথে জড়িয়েছিলেন অনৈতিক সম্পর্কে। যে কারণে তাকে একের পর বদলি হতে হয়। অপরদিকে রোববার অফিস খুললেই তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার আশা করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিস। তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তিকরে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এ নিয়ে দৈনিক মাথাভাঙ্গায় সংবাদ প্রকাশিত হলে বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক তাপসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হতে থাকে। তারা সকলেই নৈতিক চরিত্র হারানো এ দু শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
সহকর্মী এক নারী শিক্ষিকার সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে গ্রামবাসী জীবননগরের হাবিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের গলায় জুতোর মালা ঝুলিয়ে দেয়। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, অভিভাবক ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা বুধবার ওই দু শিক্ষককে লাঞ্ছিতসহ অফিসকক্ষে অবরুদ্ধ করে তাদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার দাসের বিরুদ্ধে কেবলমাত্র নারীপ্রীতির অভিযোগই নই, তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ তছরূপ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে অসদাচরণের অভিযোগও আনা হয়েছে। এ অভিযোগের তদন্তকালে এ ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকাকে হাবিবপুর স্কুলে আর ঢুকতে দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দেয়। গ্রামবাসীর এ হুমকির মুখে গতকাল এ দু শিক্ষক স্কুলে যাননি বলে জানা গেছে।
এদিকে গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গায় প্রধান শিক্ষক তাপসের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হলে বেনীপুর, হাসাদাহ, রায়পুর প্রভৃতি গ্রাম থেকে ফোন আসে তাপসের বিরুদ্ধে। তিনি যখন যে স্কুলে শিক্ষকতা করতে গেছেন সেই স্কুলের ছাত্রীদের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। যে কারণে তাকে একের পর এক বদলি হয়ে স্কুল পরিবর্তন করতে হয়েছিলো। সবর্শেষ তিনি হাবিবপুর সরকারি প্রথামিক বিদ্যালয়ে এসে সহকারী শিক্ষিকা শিউলী খাতুনের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। অবশ্য এসব অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক তাপস কুমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক আর সহকারী শিক্ষিকা শিউলী খাতুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন ডিপিও। তিনি বলেন, রোববারের ভেতরে তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া মাত্র তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করে ঊর্ধ্বতন কর্তকর্তার নিকট সুপারিশ করা হবে।